পুলিশের গুলিতে নিহত অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ হত্যা মামলায় টেকনাফ থানার প্রত্যাহারকৃত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাসসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। গতরাত বুধবার তাদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করা হয়।
পরোয়ানা জারির পর এ রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত কোনেও আসামিকে গ্রেফতারের খবর পাওয়া যায়নি। বিশেষ করে ওসি প্রদীপ কুমার দাস এখন কোথায় তা নিয়ে নানা আলোচনা তৈরি হয়েছে। তার কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
গতকাল বিকেলে প্রথমে খবর পাওয়া যায় যে, অসুস্থতাজনিত কারণ দেখিয়ে তিনি ছুটিতে গেছেন। পরে জানা যায়, তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ হত্যা মামলায় প্রধান আসামি বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলি। যিনি সিনহাকে গুলি করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে আদালতে সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার করা মামলার এজাহারে। ওসি প্রদীপ কুমার দাসকে করা হয়েছে ২ নম্বর আসামি।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গুলি করার আগে লিয়াকত তার (ওসি) সঙ্গে ফোনে পরামর্শ করেছিলেন। ওসির প্ররোচনা ও নির্দেশনাতেই লিয়াকত ঠান্ডা মাথায় সিনহাকে গুলি করে হত্যা করেন। পরে প্রদীপ ঘটনাস্থলে গিয়ে সিনহার মুখমণ্ডল ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পায়ের জুতা দিয়ে আঘাত করে বিকৃত করার চেষ্টা করেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে। প্রদীপ কুমার দাসের বিরুদ্ধে সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ ছাড়াও একাধিক কথিত ক্রসফায়ারে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠেছে। কক্সবাজার মেরিন জোন তার নেতৃত্বে অনেকটা ক্রসফায়ার জোন হয়ে ওঠে।
অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহার বোনের দায়ের করা মামলায় যাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে তারা হলেন- টেকনাফ থানা থেকে প্রত্যাহার হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া শামলাপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের প্রত্যাহারকৃত পরিদর্শক লিয়াকত আলী, উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া, এসআই টুটুল, কনস্টেবল মো. মোস্তফা।
গত ৩১ জুলাই ঈদের আগের রাতে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর পুলিশ চেকপোস্টে গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান (৩৬)। তার গাড়িতে থাকা তার সঙ্গী সিফাতের ভাষ্যমতে, সিনহাকে কোনোরুপ জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়াই চেকপোষ্টে গাড়ি থেকে নামতে বলে চার রাউন্ড গুলি ছুড়ে হত্যা করেন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই লিয়াকত আলী।
পুলিশ সদর দফতর জানিয়েছে, প্রদীপ কুমার দাস ২০১৮ সালে টেকনাফ মডেল থানায় ওসি হিসেবে যোগ দেন। ১৯৯৫ সালে পুলিশ বাহিনীতে উপপরিদর্শক পদে যোগ দেন। ২০১৯ সালে পুলিশের সর্বোচ্চ পদক বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) পান তিনি। এর আগেও একাধিকবার রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম) পান ওসি প্রদীপ।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন