সার্বিকভাবে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্য।
বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) প্রকাশিত যুক্তরাজ্যের বার্ষিক মানবাধিকার ও গণতন্ত্র বিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
যুক্তরাজ্যের ফরেন অফিস থেকে ২০১৯ সালের বার্ষিক মানবাধিকার ও গণতন্ত্র বিষয়ক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। বৈশ্বিক এই প্রতিবেদনে বাংলাদেশ অংশে মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়।
এতে উল্লেখ করা হয়, সার্বিকভাবে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। এই বছরেও বিচার বহির্ভূত হত্যা, গুম ও সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণ হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডের ঘটনাও বেড়েছে।এবছর কমপক্ষে ২ জনের মৃত্যুদণ্ডও দেওয়া হয়েছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদন অনুযায়ী বিরোধীদল বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া দুর্নীতির অভিযোগে বন্দি হয়েছিলেন, তখন তিনি পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা পাননি। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা বা আইন-শৃঙ্খলা ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে ডিজিটাল সুরক্ষা আইন (ডিএসএ) ২০১৮ এর অধীনে, ৪২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী এবং বিরোধী রাজনৈতিক পক্ষকে গ্রেফতার করার জন্য সরকারকে ডিজিটাল সুরক্ষা আইনের বিধানগুলো সমালোচিত হয়ে আসছে। রিপোর্টার্স উইন্ডো বর্ডারস প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে বাংলাদেশ চার ধাপ নিচে নেমে আসে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যুক্ত সংগঠনগুলোর দ্বারা ২০১৯ সালেও সহিংসতা অব্যাহত ছিল। অনলাইনে সরকারের সমালোচনা করে পোস্ট দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে একছাত্রকে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা পিটিয়ে হত্যা করেন।
মিয়ানমার সেনাবাহিনী তামোডার কর্মকাণ্ডে বাস্তুচ্যুত ও রাষ্ট্রহীন রোহিঙ্গা জনগণকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে স্বেচ্ছায়, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছে। তবে কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে উল্লেখযোগ্য অপরাধের খবর পাওয়া গেছে। সেখানে প্রায় ৮ লাখ ৫৫ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী বাস করছে। রোহিঙ্গাদের অপরাধের মধ্যে হত্যাকাণ্ড (প্রায় ৩০টি মামলা), লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা, অপহরণ, মাদকের অবৈধ ব্যবসা এবং মানবপাচার অন্তর্ভুক্ত। বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গা শিবিরের আশেপাশে অতিরিক্ত পুলিশ স্টেশন প্রতিষ্ঠা বেড়া নির্মাণ ও রাতে টহল পরিচালনা করছে।
২৫ সেপ্টেম্বর কুতুপালং শিবিরে একটি শান্তিপূর্ণ সমাবেশের পরে সুরক্ষা উদ্বেগের কারণ হিসেবে সরকার ক্যাম্পগুলোতে ইন্টারনেট অ্যাক্সেসের ওপর নিষেধাজ্ঞাগুলো প্রবর্তন করেছিল, বেশ কয়েকটি সহিংস ঘটনা এবং হোস্ট সম্প্রদায়ের সঙ্গে উত্তেজনা বাড়িয়ে তোলে। রোহিঙ্গাদের জন্য যুক্তরাজ্য আরো ১১৭ মিলিয়ন পাউন্ড ঘোষণা দিয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য যুক্তরাজ্য ২৫৬ মিলিয়ন পাউন্ড সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেয়।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন