দেশজুড়ে উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর, পাশাপাশি এই দিন নিজের ১৯তম বিয়েবার্ষিকী। তবে ঈদের আগের দিন রোববার (২৪ মে) দিনগত রাত ১১টায় ফোন আসে নারায়ণগঞ্জের বন্দরের ধামগড় ইউনিয়নের ইস্পাহানি বাজার এলাকায় একজন ব্যবসায়ী করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তার দাফনে কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। ভয়ে কেউ এগিয়েও আসছে না।
এ সময় ঈদের রাতের প্রথম অংশেই রাত সাড়ে ১২টায় স্বেচ্ছাসেবী টিম নিয়ে রাতের মধ্যেই গোসল জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন করা হয়।
বলছি করোনা আক্রান্তদের সেবায় নারায়ণগঞ্জের আলোচিত কাউন্সিলর যিনি করোনার শুরু থেকেই নানা কার্যক্রম ও করোনায় মৃতদের দাফন কাফনে এগিয়ে এসে এখন পর্যন্ত অর্ধশতাধিক দাফন করেছেন সেই মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের কথা।
সোমবার ভোরে দাফন শেষে ফিরে বাংলানিউজের সঙ্গে কথা হলে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি জানান, এটি তাদের টিমের ৫৮তম দাফন। এর আগে ২৪ মে (রোববার) রাত সাড়ে ১১টায় আরেকজনের করোনা পজিটিভ মরদেহের দাফন শেষে ফিরেই এই দাফনটি করতে যান।করোনায় মৃত ব্যক্তিকে নিয়ে যাচ্ছেন খোরশেদের টিম।
জখোরশেদ বলেন, সোমবার আমার ১৯তম বিবাহবার্ষিকী ও পবিত্র ঈদের দিন। রোববার আমার স্ত্রীর টেস্ট রিপোর্টে করোনা ধরা পড়লেও আমার পরিবারের বাকি সবাই ভালো আছেন। আমি আমার এই যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই আলাদা থাকছি। হঠাৎ রাতে বন্দরের এক ব্যবসায়ীর ছেলে এলএলবি অনার্সে অধ্যয়নরত আকিব জানায় তার বাবা মারা গেছেন। তাকে বলি অ্যাম্বুলেন্স থেকে মরদেহ নামিয়ে রাখো আমরা আসছি, তিনি এতে জানান কেউ এগিয়ে আসছেন তাই মরদেহও নামাতে পারছে না তিনি। পরে সব ক্লান্তিকে পেছনে ফেলে, স্ত্রী করোনায় আক্রান্ত ও বিবাহবার্ষিকী ভুলে যাই পাশাপাশি কিছুক্ষণ পর ঈদ সেটিও ভুলে গিয়ে টিম মেম্বারদের নিয়ে দাফনের জন্য রওয়ানা দিয়ে সাড়ে ১২টায় পৌঁছাই।করোনায় মৃত ব্যক্তিকে দাফন করছেন খোরশেদের টিম।
রাত দেড়টায় গোসল ও জানাজা শেষে দাফন করি। কিন্তু কবরে দেওয়ার জন্য বাঁশ না পাওয়ায় সেন্টারিংয়ের বাঁশের মাচা দিয়ে দাফন করি। এই সময়েও আমাদের দাফনের টিমে অংশ নেন হীনা, হাফেস শিব্বির, আনোয়ার, সেলিম মোল্লা, সুমন ও রাফী। ঈদের দিনও আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন