ঝালকাঠি রাজাপুরে বালিশ চাপা দিয়ে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে স্বামী ইউপি সদস্য মোঃ কুদ্দুস হোসেন (৪৫) সহ পাঁচ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। শনিবার রাত ১১ টায় রাজাপুর থানায় নিহত গৃহবধূ রুনা লায়লার ভাই মোঃ মিজান গাজী বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
চারদিন ধরে লাশ নিয়ে বিক্ষোভ
নিহতের স্বজনরা জানায়, গত বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে রাজাপুরের নারিকেলবাড়িয়া গ্রামে স্বামীর বাড়ির নিজ শয়ন কক্ষে রুনা লায়লা (২৬) নামে ওই গৃহবধূর লাশ ঝুলন্ত অবস্থায উদ্ধার করে রাজাপুর থানা পুলিশ। নিহত রুনা লায়লা রাজাপুর উপজেলার শুক্তাগড ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওযার্ডের ইউপি সদস্য যুবলীগ নেতা মোঃ কুদ্দুস হোসেনের দ্বিতীয় স্ত্রী এবং মঠবাড়ি ইউনিয়নের ডহশংকর গ্রামের আমির হোসেন গাজীর মেয়ে। স্বামী কুদ্দুস বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচার করে বলে স্বজনদের অভিযোগ । পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যাকারীদের পক্ষ অবলম্বন করারও অভিযোগ করেন স্বজনরা।
নিহত গৃহবধূর বাবা আমির হোসেন গাজী জানায়, তাঁর ছোট মেয়ে রুনা লায়লার দশ বছর আগে বিয়ে হয় একই উপজেলার শুক্তগড় ইউনিয়নের নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের মজিবর হাওলাদারের ছেলে আব্দুল কুদ্দুসের সাথে। তাদের দুটি সন্তান রয়েছে। তার মেয়ে জামাই কুদ্দুস মেম্বর নির্বাচন করার সময় শ্যালকের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা নেয়। সেই টাকা পরিশোধ না করে সম্প্রতি আবারো দুইলাখ টাকা দাবি করে সে। টাকা না দেওয়ায় রুনা লায়লাকে নির্যাতনের পরে হত্যা করে কুদ্দুস।
গত শুক্রবার ময়নাতদন্ত শেষে পুলিশ মরদেহ তার বাবার বাড়িতে পৌছে দেয়। লাশ দাফন না করে বিকেলে ওই ইউপি সদস্যের বিচারের দাবিতে লাশ নিয়ে নিজ জেলা ঝালকাঠি প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ করেন মৃতের স্বজন ও এলাকাবাসী। পরে পুলিশ বিচারের আশ্বাস দিলে মরদেহ তার বাবার বাড়িতে দাফনের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। স্বামী ইউপি সদস্যকে গ্রেপ্তারের দাবিতে চার দিনেও গৃহবধূর লাশ দাফন করেনি তাঁর স্বজনরা। আজ রবিবার সকালেও ডহশংকর গ্রামে বাবার বাড়িতে মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ করেন।
রাজাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জাহিদ হোসেন জানান , যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগে এনে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এ মামলা করা হয়েছে। ইউপি সদস্য মোঃ কুদ্দুস হোসেনসহ সকল আসামীরা পালাতক রয়েছে। তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন