কুড়িগ্রামের উলিপুরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি অভিযোগে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে স্থানীয় রাজনীতি। একের পর এক সংবাদ সম্মেলন করে তারা একে অপরের বিরুদ্ধে তুলে ধরছেন দুর্নীতির নানা অভিযোগ। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ফের সংবাদ সম্মেলন করেছেন আত্মহত্যার হুমকি দেয়া সাবেক এমপি আমজাদ হোসেন তালুকদার।
নিজ বাসভবনে ডাকা ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি বর্তমান এমপি অধ্যাপক এম এ মতিন ও উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন মন্টুর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরেন। এ নিয়ে উভয়পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েই চলছে। এতে যে কোনো সময় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
আমজাদ তালুকদার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ৭৫-পরবর্তী সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলনসহ সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সামনে থেকে লড়াই করেছি। অথচ ত্যাগী নেতাকর্মীদের এখন অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে। বর্তমানে যারা এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যান হয়েছেন তারা নিজেদের আত্মীয়-স্বজনকে পৌর ও ইউনিয়ন কমিটিতে বিভিন্ন পদে বসিয়েছেন।
তিনি বলেন, বর্তমান এমপি এমএ মতিনের আপন বড় ভাই আবদুল করিম কুখ্যাত রাজাকার। এমপি নিজেই এক সময় ছাত্রদলের ক্যাডার ছিলেন। এই এমপি সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড থেকে কমিশন নিচ্ছেন। এমনকি স্থানীয় কৃষকের নামে বরাদ্দকৃত ধানেরও ভাগ খাচ্ছেন।
সাবেক এমপি আমজাদ হোসেন তালুকদার আরও বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম হোসেন মন্টু বিএনপি-জামায়াতের লোকজনকে দলে জায়গা দিয়েছেন। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় নমিনেশন দেয়ার ক্ষেত্রে বাণিজ্য করেছেন। এ কারণে ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে মাত্র দুটিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া দশম জাতীয় সংসদের উপনির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ডা. আক্কাছ আলী সরকারের কাছ থেকে আট লাখ টাকা নিয়ে অসুস্থতার ভান করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অবস্থান নিয়েছিলেন তিনি। এভাবেই নানা অপকর্মের মধ্য দিয়ে দলের নাম ব্যবহার করে নিজের আখের গুছিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতি শিউলী, সিনিয়র সহসভাপতি সোলায়মান সরদার বাদশা, উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য বাবর আলীসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
দল ও রাজনীতিতে অবমূল্যায়নের শিকার হয়ে সাবেক এমপি আমজাদ হোসেন তালুকদার গত ২১ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলন করে আত্মহত্যার হুমকি দিয়ে আলোচনায় আসেন। পরে ২৫ ফেব্রুয়ারি উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম হোসেন মন্টু। তারই জবাবে ফের সংবাদ সম্মেলন করলেন আমজাদ হোসেন তালুকদার।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন