সরকারি গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোষ। এতে একদিকে যেমন জ্বালানি তেল বেশি যাচ্ছে সরকারি কোষাগার থেকে। তেমনি ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগের।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ১ জানুয়ারি ডা. শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোষ মাদারীপুর থেকে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। এর আগে তিনি দিনাজপুরের একটি উপজেলায় টিএইচও এবং মাদারীপুর সদর হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
শিবচরে যোগদানকালে সরকারের পক্ষ থেকে তাকে সরকারি কাজে ব্যবহারের জন্য কালো রংঙের একটি গাড়ি দেয়া হয়। নিয়ম রয়েছে সরকারি কাজ ছাড়া উপজেলার বাইরে গাড়ি নিয়ে যেতে হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ও সংশ্লিষ্ট কারণ থাকতে হবে। অথচ, ডা. শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোষ শিবচর উপজেলার বাইরে ব্যক্তিগত কাজে প্রতিনিয়ত জেলা সদরে যাতায়াত করছেন। যা শিবচর উপজেলা থেকে শহরের দুরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার। তিনি শহরের এসে বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্রে রোগী দেখেন।
এছাড়া মাদারীপুর শহরের ইটেরপুল এলাকায় অবস্থিত একটি নার্সিং কলেজ ও একটি নার্সিং ইনস্টিটিউটে সপ্তাহে ২/৩ দিন ক্লাস নেন তিনি। পাশাপাশি সরকারি গাড়ি নিয়ে তিনি ঘন ঘন মাদারীপুরের তার নিজ বাড়িতে যান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শহরে তার বাসার সামনে নিয়মিত রোগী দেখেন। এছাড়া দুটি নার্সিং ইনস্টিটিউটেও ক্লাস নেন। এক্ষেত্রে ব্যবহার করেন সরকারি গাড়ি।
গাড়িচালক রাকিবুল হাসান বলেন, স্যার আমাকে যেখানে যেতে বলে আমি যাই। আজকে (বুধবার) স্যার প্রথমে তার বাসায় নামেন। পরে আমি গাড়ির কাগজপত্র ঠিক করতে বিআরটিএ চলে যাই। এরপরে ফোন দিয়ে আমাকে নার্সিং ইনস্টিটিউট এর নিচে আসতে বলেন, আমি বিআরটিএ থেকে এখানে চলে আসি। পরে তাকে নিয়ে আরেকটি নার্সিং ইনস্টিটিউটে যাই।
জানতে চাইলে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোষ বলেন, গাড়ি আমি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করি না। ড্রাইভার আমাকে বুধবার দুপুরে মাদারীপুর শহরের বাসায় নামিয়ে দেয়। পরে সে বিআরটিএ গাড়ির কাগজ ঠিক করতে যায়। এরপরে আমাকে নার্সিং ইনস্টিটিউটের নিচ থেকে নিয়ে চলে যায়। এতে সরকারি গাড়ির অব্যবহার হচ্ছে না।
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি ব্যক্তিগত কাজে ওই চিকিৎসক সরকারি গাড়ির ব্যবহার করেন। তাহলে তার বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ ব্যবস্থা নেবে।
সরকারি যেকোনো যানবাহন ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারে সর্ম্পূণ নিষেধজ্ঞা রয়েছে জানিয়ে মাদারীপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। চাইলেই তিনি ব্যক্তিগত কাজে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন না।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন