মার্চ মাসে পেঁয়াজ রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে পারে ভারত। ভারতীয় ও বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা তেমনটাই বলছেন। সরবরাহ সংকট ও অভ্যন্তরীণ মূল্যবৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে প্রায় পাঁচ মাস ধরে ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ রেখেছে। তবে পর্যাপ্ত পরিমাণে নতুন পেঁয়াজ ওঠায় ফের বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি শুরু হবে বলে ভারতীয় রফতানিকারকরা বাংলাদেশি আমদানিকারকদের জানিয়েছেন। সেক্ষেত্রে প্রথম দিকে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম হতে পারে কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বন্দরের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, আগামী ২ মার্চ এ বিষয়ে ভারতে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেই বৈঠকের পরই ভারত পেঁয়াজ রফতানির নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে পারে। ২ মার্চ বিকাল অথবা ৩ তারিখ থেকে বন্দর দিয়ে দেশে পেঁয়াজ আমদানি হতে পারে।
ভারতীয় পেঁয়াজ রফতানিকারক সঞ্জয় কুমার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কমে যাওয়া ও দাম বৃদ্ধির কারণে ভারত সরকার পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয়। সম্প্রতি বিভিন্ন প্রদেশে নতুন পেঁয়াজ ওঠায় বাজারে সরবরাহ বেড়েছে। দামও কমে এসেছে। যার কারণে কিছুদিন আগেই চেন্নাই বন্দর দিয়ে ১০ হাজার টন পেঁয়াজ রফতানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। এমন অবস্থায় সরকারের বাণিজ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয় পেঁয়াজ রফতানির বিষয়ে বৈঠক করেছেন। সেই বৈঠকে পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে ফলপ্রসু আলোচনা হয়েছে। আগামী মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে পেঁয়াজ রফতানি সংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। নির্দেশনা পেলে আবারও বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি শুরু হবে।’
হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক মোবারক হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে ইতোমধ্যে নতুন জাতের পেঁয়াজ উঠেছে। ফলে সেই দেশের বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে। এমনকি পেঁয়াজ রফতানি না হওয়ার ভারতের অনেক প্রদেশে কৃষকরা উপযুক্ত দাম না পেয়ে আন্দোলন করছেন। পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে ভারতীয় রফতানিকারকরা আমাদের জানিয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগামী ২ মার্চ এ বিষয়ে আদেশ হতে পারে। সকালের দিকে আদেশ হলে সেই দিনই বিকালে অথবা পরের দিন বন্দর দিয়ে দেশে পেঁয়াজ আমদানি হবে। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হলে দেশের বাজারে পেঁয়াজ নিয়ে যে অস্থিরতা বিরাজ করছে সেটি অনেকটাই কমবে। এই পেঁয়াজের দাম শুরুতে ৩০-৩৫ টাকা কেজি হবে।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাণিজ্য সচিব ড. জাফর উদ্দীন জানান, ‘ভারত থেকে পেঁয়াজ আসার বিষয়ে আমাদের কাছে এখনও কোনও ম্যাসেজ আসেনি।’
প্রসঙ্গত, দাম বৃদ্ধি ও সরবরাহ সংকট দেখিয়ে গত ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে সব ধরনের পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয় ভারত। এরপর মিয়ানমার, মিসর, পাকিস্তান, তুরস্ক, চীনসহ বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ এনেছে বাংলাদেশ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন