ক্যাসিনোকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেফতার পুরান ঢাকার গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি এনামুল হক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুপন ভূঁইয়া অবৈধ উপায়ে অর্জিত টাকা ও সোনাদানা রক্ষা করতে সেগুলো নিয়ে ওয়ারীর মমতাজ ভিলায় জমিয়ে রাখতেন। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের সময় গা ঢাকা দিয়ে থাকা অবস্থায় ওই বাড়িতে যাতায়াত ছিল তাদের। এসব টাকা কোথাও সরাতে না পেরে তড়িঘড়ি করে বস্তার মধ্যে লুকিয়ে রেখেছিলের এনু ও রুপন। এ রকম আরও কোনও বাড়িতে টাকা রয়েছে কি না তার খোঁজ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
গত সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) গভীর রাত থেকে রাজধানীর ওয়ারীর লালমোহন সাহা স্ট্রিট এলাকায় একটি বাসায় অভিযান শুরু করে র্যাব। অভিযান শেষ হয় মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে। অভিযানে নেতৃত্ব দেন র্যাব সদর দফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম।
এর আগে, গত ২৪ সেপ্টেম্বর এনু-রুপনের ওয়ারীর একটি বাসা থেকে পাঁচ কোটি টাকা ও আট কেজি স্বর্ণ জব্দ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এর ৫ মাস পর বাড়িটিতে অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে ২৬ কোটি ৫৫ লাখ নগদ টাকা পায় র্যাব। নগদ টাকা ছাড়াও ৫ কোটি ১৫ লাখ মূল্যমানের এফডিআর, এক কেজি সোনা, ৯ হাজার ৩০০ ইউএস ডলার, ৫ হাজার ৩৫০ ভারতীয় রুপি, এক হাজার একশ ৯৫ চীনের ইয়েন, এক হাজার ৫৬০ থাই মুদ্রা, একশ ইউএই দিরহাম উদ্ধার করা হয়।
র্যাবের গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, এনু-রুপন দুই ভাই প্রথম অভিযানের পর এবং সিআইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার আগ পর্যন্ত ওয়ারীর লালমোহন সাহা স্ট্রিটের ১১৯/১ এর এই বাসাটিতে মাঝেমধ্যে যাতায়াত করতেন। কখনওবা এই বাসাতেই রাত্রীযাপন করতেন।
গোয়েন্দা সূত্র আরও জানায়, এনু-রুপন গ্রেফতারের আগে ওয়ারীর ১১৯/১ নম্বর বাসাটির সন্ধান জানতো না কেউ। গত সেপ্টেম্বরে অন্তত ২৬ বাড়ির তথ্য শোনা গেলেও ১৫টি বাড়ির সন্ধান পেয়েছিল র্যাব। ওইসব বাসায় অভিযান চালানোর পর কয়েকটি বাড়িতে টাকা, স্বর্ণ ও বিদেশি মুদ্রা মেলে। এনু-রুপন সিআইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর আরও কিছু তথ্য পায় র্যাবের গোয়েন্দারা। সেই তথ্যের ভিত্তিতেই পাঁচমাস পর আবার অভিযান চালানো হয়।
এনু-রুপনকে কেরানীগঞ্জ থেকে সিআইডি গ্রেফতারের পর জানিয়েছিল, গ্রেফতারের সময় এনামুল হক এনু ও রুপন ভূঁইয়ার কাছ থেকে ২২টি জমির দলিল, পাঁচটি গাড়ির কাগজপত্র ও ৯১টি ব্যাংক হিসাবে ১৯ কোটি টাকা থাকার প্রমাণ পাওয়া পেয়েছে। এ ছাড়া নগদ ৪০ লাখ টাকা ও ১২টি মোবাইল জব্দ করা হয়। অন্তত ২৬ টি বাড়ির তথ্য জানতে পারে সিআইডি।
র্যাব-৩ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল রকিবুল হাসান ব্রেকিংনিউজকে বলেন, ‘গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর দুর্নীতিবিরোধী যে অভিযান শুরু হয়েছিল তার অংশ হিসেবে সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে লালমোহন সাহা স্ট্রিটের বাড়িতে আমরা গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব সদর দফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম নেতৃতে অভিযান পরিচালনা করি। ওই বাসার নিচতলার কেউ থাকত না। বেশ সুরক্ষিত অবস্থায় রাখা ছিল সবকিছু। এনামুল-রুপনের দুই ডজন বাড়ির বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে আমরা এ বাসার সন্ধান পাই।’
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন