লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় শিক্ষিকার মারপিটে ফাঁটা ঠোঁট নিয়ে আব্দুল্লাহ আল মামুন (১২) নামে এক শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ১৯ নম্বর বেডে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে আহত শিক্ষার্থীকে।
আহত শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন উপজেলার পূর্ব ভেলাবাড়ি গ্রামের রাইচমিল শ্রমিক আলতাব হোসেনের ছেলে। সে ভেলাবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র।
হাসপাতালে আহত শিক্ষার্থী জানায়, ভেলাবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুনের কাছে তার এক বন্ধু ২০ টাকা হাওলাত নিয়ে দিতে গড়িমসি করে। এ নিয়ে সোমবার ক্লাসে দুই বন্ধুর মাঝে কথাকাটাকাটি হয়। এ সময় ক্লাশে প্রবেশ করেন সহকারী শিক্ষিকা শামছুন নাহার। তিনি বিস্তারিত না শুনে রাগান্বিত হয়ে হাতে থাকা ডাস্টার দিয়ে মামুনকে এলোপাথারী মারপিট করেন। এতে একপর্যায়ে তার ঠোঁট ফেঁটে রক্ত ঝড়তে শুরু হলে অজ্ঞান হয়ে যায় সে। পরে সহপাঠিরা মিলে তাকে উদ্ধার করে অফিস কক্ষে প্রাথমিক চিকিৎসা দিলে অধাঘণ্টা পরে জ্ঞান ফিরে আসে মামুনের।
এরপর দায় এড়াতে আহত শিক্ষার্থীর বাড়িতে ফোন করে তাকে নিয়ে যেতে বলা হয়। এ সময় আহত মামুনকে উদ্ধার করে আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। ঘটনাটি বেগতিক দেখে শিক্ষিকা শামছুন নাহার ওই শিক্ষার্থীর আচরণ খারাপ ও তাকে যৌনহায়রানি করা হয় বলে অভিযোগ তুলে শিক্ষকদের কাছে নালিশ করেন। এ নিয়ে প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষকরা বৈঠক করে উল্টো আহত শিক্ষার্থী মামুনকে ছাড়পত্র (লাল টিসি) দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে অভিভাবকদের দাবি।
আহত শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুনের চাচা নুর আলম জানান, ক্লাসে দুষ্টোমির অপরাধে মারপিট করেই থেমে থাকেনি উল্টো শিশু'র বিরুদ্ধে মধ্যবয়স্কা শিক্ষিকা যৌনহয়রানির অভিযোগ তুলে তাকে লালটিসি দেয়ার হুমকি দিচ্ছে। তারা আহত শিক্ষার্থীকে চিকিৎসাও দেয়নি। এ ঘটনায় থানাসহ বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
ভেলাবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনিচুর রহমান লাল টিসি'র হুমকি অস্বীকার করে জানান, ওই শিক্ষার্থী শিক্ষিকাকে ধর্ষণ করতে চেয়েছিল বলেই তাকে একটু শাষন করা হয়েছে। এরপর তার অভিভাবককে ডেকে ওই শিক্ষার্থীকে বাড়ি পাঠানো হয়েছে। এটা নিয়ে হাসপাতালে বা থানায় মামলা করে লাভ কি? একজন খারাপ ছাত্রের জন্য পুরো প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নষ্ট করতে পারি না।
আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের দায়িত্বে থাকা উপ সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার সৌরভ দাস জানান, শিক্ষার্থী মামুনের দুই হাতের বাহুতে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার ঠোঁট ফেঁটে ফুলাজখম হওয়ায় তাকে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন