২৫ বছর আগে প্রণীত ড্রেনেজ মাস্টারপ্ল্যানের (মহাপরিকল্পনা) আওতায় চট্টগ্রাম মহানগরে তিনটি নতুন খাল খননের প্রস্তাব করা হয়েছিল। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন সময় চার বছর আগে পেরিয়ে গেছে। কিন্তু একটি খালও খনন হয়নি। তবে ওই মহাপরিকল্পনার পাশাপাশি নতুন প্রস্তাবনার আলোকে নতুন একটি খাল খনন শুরু করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)।
প্রায় ছয় বছর আগে প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পায়। কিন্তু ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত জটিলতায় গত অর্ধযুগেও প্রকল্পের কাজ শুরু করতে পারেনি চসিক। তবে সম্প্রতি প্রকল্পের আওতায় ১০ দশমিক ৮৫১ একর ভূমি অধিগ্রহণের অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ভূমি অধিগ্রহণ কমিটি। এরপর খাল খননে দরপত্র আহ্বান করে ঠিকাদার নিয়োগ দেয়া হয়।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল সোহেল আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘নগরের বহদ্দারহাট বারইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত ২ দশমিক ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ ৬৫ ফুট প্রস্থ নতুন এই খাল খননে আর কোনো বাঁধা নেই। মঙ্গলবার থেকে খাল খননের কাজ শুরু হচ্ছে। আমরা বর্ষার আগেই খাল খনন কাজ এগিয়ে নিতে চাই।’
চসিকের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জানান, খাল খননের সংশোধিত প্রকল্পটি ২০১৮ সালের ৭ নভেম্বর একনেকে অনুমোদন হয়। একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী নান্দনিক দিক বিবেচনায় খালের দুপাশে প্রয়োজনীয় বাড়তি জায়গা অধিগ্রহণ করে ওয়াকওয়ে নির্মাণের নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রকল্প যেভাবে একনেকে অনুমোদিত হয়েছে সেভাবেই খনন করা হবে। খালের দুই পাশে প্রতিরোধ দেয়াল নির্মাণ করা হবে। উভয় দিকে ২০ ফুট করে সড়ক এবং ৬ ফুট করে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে।
চসিক সূত্রে জানা যায়, সিডিএ ১৯৯৫ সালে যে ড্রেনেজ মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করেছিল তাতে তিনটি খাল নতুন খননের প্রস্তাব ছিল। এর মধ্যে একটি বারইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত। অপর দুটি হলো নয়াখাল থেকে শীতলঝর্ণা এবং মুরাদপুর থেকে বহদ্দারহাট। পরবর্তী ২০ বছরের মধ্যে ওই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কথা থাকলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। ২০১৪ সালে নগরের বহদ্দারহাটসহ আশপাশে প্রধান সড়ক-উপসড়ক ও এলাকা ভয়াবহ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলে সরকার বারইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্ষন্ত একটি নতুন খাল খননের জন্য ৩২৬ কোটি ৮৪ লাখ ৮১ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়। কিন্তু ওই প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়নি। ২০১৫ সালে মেয়র হওয়ার পর থেকে আ জ ম নাছির উদ্দীন ওই খাল খননের প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেন। নতুন এই খাল খননের সংশোধিত প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ২৫৬ কোটি ১৫ লাখ ৫৬ হাজার টাকা।
এদিকে দীর্ঘ দুই যুগ পর নগরে নতুন একটি খাল খনন শুরুর খবরে আশার সঞ্চার হয়েছে নগরবাসীর মাঝে। এটি বাস্তবায়ন হলে নগরের মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, পূর্ব ষোলশহর, পূর্ব বাকলিয়া, পশ্চিম বাকলিয়া, কাপাসগোলা, বাদুরতলাসহ আশপাশে এলাকায় জলাবদ্ধতা থাকবে না বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন