সম্প্রতি ভারতের লোকসভায় পাস হওয়া বহুল বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল প্রসঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটি আইনে পরিণত হলে ধর্মনিরপেক্ষ দেশের অবস্থান থেকে ভারতের পদস্খলন হবে। দেশটির ঐতিহাসিক অবস্থান দুর্বল হয়ে যাবে।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে এই মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে ভারতের লোকসভায় বিতর্কিত এই বিলটি পাস হয়। আজ বুধবার বিলটি রাজ্যসভায় পাস হলে আইনে পরিণত হবে। এই বিলে মুসলিম বাদে প্রতিবেশী তিন দেশের নাগরিকত্ব দেয়ার কথা বলা আছে।
অবশ্য নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তার বক্তব্যে দাবি করেছেন, প্রতিবেশী বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন না থামার কারণে তারা নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটি এনেছেন।
এ বিষয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘আমি মনে করি, এ ব্যাপারে যে কথা উঠেছে সেগুলো সত্য নয়। আমাদের দেশে সংখ্যালঘু ও ধর্মীয় নির্যাতন হয় না। আমাদের দেশে ধর্ম যার যার কিন্তু উৎসব সবার। এখানে অন্য ধর্মের কেউ নির্যাতিত হয় না। সম্প্রতি বিদেশ থেকে আমাদের অনেক লোক দেশে ফিরে আসছে। কারণ, আমরা উন্নয়নের মহাসড়কে উঠেছি। এখানে সব ধর্মের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধাবোধ রয়েছে।’
আবদুল মোমেন বলেন, ‘আমাদের সরকারের অনেক বড় বড় সিদ্ধান্ত নেয় অন্য ধর্মের লোক। আমরা তাদের বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে একই দৃষ্টিতে দেখি। কে কোন ধর্মের, সেটা আমরা বিচার করি না। বিচার করি যে, সে বাংলাদেশের নাগরিক কি না বা তার যোগ্যতার মাপকাঠি। আমাদের সবধরনের চাকরি-বাকরিতে সব ধর্মের লোক রয়েছে। তাদের আমরা অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে দেখি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত হচ্ছে বলে ভারত যে তথ্য দিয়েছে সেটা সত্য নয়। যারা এ তথ্য দিয়েছেন তারা সত্য বলেননি। যারা বুঝেছেন তারাও সত্য বলেননি। আমি আশা করব, বাংলাদেশে যারা সংখ্যালঘু নেতৃত্বে রয়েছেন, তারাই এ বিষয়ে কথা বলবেন।’
তিনি বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি, ভারত আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ। দুই দেশের মধ্যে এখন অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক চলছে; যা সোনালী অধ্যায় নামে পরিচিত। বাংলাদেশের মানুষ আশা করে, ভারত এমন কিছু করবে না যা আমাদের দুশ্চিন্তার কারণ হবে।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন