শাহিনা আক্তার। ফ্যামিলি প্ল্যানিং বিভাগে চাকরি করতেন। বর্তমানে অবসর গ্রহণ করেছেন। হজে যাওয়ার জন্য ব্যাংকে জমা রেখেছিলেন ১০-১২ লাখ টাকা। মোটা অংকের এফডিআরও ছিলো ব্যাংকে। কিন্তু সমস্যা সমাধানের জন্য ২৫ লাখ টাকা অবলিলায় বিশ্বাস করে দিয়ে দেন জ্বীনের বাদশাদের। টাকা খোয়ানোর পর রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় মামলা করে ভুক্তভোগী শাহিনা আক্তার। মামলার তদন্ত করতে গিয়ে সিআইডির একটি টিম ভোলা থেকে এই জ্বীনের বাদশার ৭ সদস্যকে গ্রেফতার করে।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সিআইডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোস্তফা কামাল।
গ্রেফতারকৃত ৭ জ্বীনের বাদশা হলেন- মো. সুমন ফকির (২০), মো. মুনসুর আহমেদ (২৫), মো. হাছনাইন ফকির (২০), মো. হাবিবুল্লাহ (৩২), মো. লোকমান ভুইয়া কাজী (২৭), মো. রিয়াজ উদ্দিন (৩৪) (বিকাশ এজেন্ট) ও মো. ফজর আলী জোমাদার বাড়ি (৩৬)।
বিশেষ পুলিশ সুপার মোস্তফা কামাল বলেন, ভুক্তভোগী শাহিনা আক্তার একটি মাধ্যমে নম্বর পান। যে নম্বরে ফোন দিলে সব সমস্যার সমাধান করে দেয়া হবে। তিনি আগ্রহ বশঃত ওই নম্বরে ফোন করেন এবং ফোন করলে তাকে বলা হয় আমাদের সেবা নেয়ার আগে দুই হাজার ১০০ টাকা দিয়ে প্রথমে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। শাহিনা আক্তার তাদের কথামতো রেজিস্ট্রেশন করেন। রেজিস্ট্রেশন করার পর জ্বীনের বাদশা টেলিফোনেই হাজির হাজির হন। হাজির হওয়ার পরে ভুক্তভোগীর এক একটি সমস্যার কথা শোনেন এবং এক একটি সমস্যা সমাধানের জন্য মোটা অংকের টাকা দাবি করেন।’
তিনি বলেন, ‘টাকা দাবির পর ৭টি বিকাশ নম্বর ভুক্তভোগীকে দেয়া হয়। ৭টি নম্বরে বিকাশের মাধ্যমে ৩ মাসে ভুক্তভোগী ওই নারী ২৫ লাখ টাকা লেনদেন করেন। ২৫ লাখ টাকা দেয়ার পর আরও টাকা দেয়ার জন্য পাশের বাসার প্রতিবেশীর কাছে টাকা ধার চাইতে গেলে বিষয়টি তখন ওই নারীর ছেলে জানতে পারে। এরপর হাতিরঝিল থানায় মামলা করেন। হাতিরঝিল থানার মামলা তদন্ত করে জ্বীনের বাদশার সন্ধায় পাওয়া যায় ভোলা জেলায়। এরপর তাদের গ্রেফতার করা হয়।’
মোস্তফা কামাল বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার ৭ জন ২৫ লাখ টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে আরও ভুক্তভোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে। গত তিন চার মাস জ্বীনের বাদশা সেজে টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করেছে। এমনকি তাদের চক্রের বড় ভাইয়েরা আছে। তাদেরকেও গ্রেফতার করতে অভিযান চালানো হবে। আমরা বিকাশ স্ট্যাটমেন্ট নিয়ে এসেছি সেখানে দেখা যায় এই নারী ছাড়াও আরও চার পাচজনের টাকা নেয়ার তথ্য আমরা পেয়েছি।’
যেহেতু বড় ধরনের লেনদেন হয়েছে সেহেতু বিকাশের কোনও কর্মকর্তা এর সঙ্গে জড়িত কি-না। এমন প্রশ্নের জবাবে সিআইডি কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতার সাত জনের মধ্যে একজন বিকাশ এজেন্টের লোকও আছে। মোটা অংকের টাকা লেনদেন হওয়াতে বিকাশ তাদের দায় দায়িত্ব এড়াতে পারে না। এর বাইরেও যদি আর কেও জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন