কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকাজুড়ে বিচরণ রয়েছে একাধিক সন্ত্রাসী বাহিনীর শত শত সশস্ত্র সদস্য। জল ও স্থলে সমান তালে চলে তাদের দস্যুতা ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম।
এ অবস্থায় গত বছরের ২০ অক্টোবর প্রথম দফায় ৪৩ জলদস্যু আত্মসমর্পণের পর আগামীকাল শনিবার ১৩ দস্যু বাহিনীর আরও শতাধিক জলদস্যু আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছে। সকালে মহেশখালীতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ প্রধানের হাতে অস্ত্র ও গুলি জমা দিয়ে সন্ত্রাসীরা আত্মসমর্পণ করবেন।
সম্প্রতি সুন্দরবনে একের পর এক জলদস্যু বাহিনী আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার ঘটনায় উদ্বুদ্ধ হয় কক্সবাজারের উপকূলীয় জলদস্যু গ্রুপগুলো। এ নিয়ে কক্সবাজারের উপকূলীয় জলদস্যু বাহিনীগুলোর সদস্যদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সুযোগ দেয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে।
কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন জানান, কালারমার ছড়া বাজার মাঠে এবারের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সম্মানিত অতিথি হিসেবে থাকবেন পুলিশের আইজি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আত্মসমর্পণ করা সন্ত্রাসীদেরকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হবে। তবে সন্ত্রাস ও দস্যুতার পথ পরিহার করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার জন্য পুলিশ প্রশাসন ও সরকারের তরফ থেকে গতবারের মতো তাদেরকে সর্বোচ্চ আইনি সহায়তাসহ সার্বিক সহায়তা করা হবে।
কুতুবদিয়া থানার ওসি দিদারুল ফেরদৌস যুগান্তরকে জানান, কুতুবদিয়ার শীর্ষ জলদস্যু গ্রুপ গুরাকালু বাহিনীর প্রধান গুরাকালুসহ ৯ সন্ত্রাসী ইতিমধ্যে আত্মসমর্পণের জন্য পুলিশের সেফহোমে চলে এসেছে। তাছাড়া প্রথম দফায় আত্মসমর্পণের পর থেকে এ পর্যন্ত কুতুবদিয়ায় শতাধিক জলদস্যু গ্রেফতার হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে বিপুল অস্ত্র ও গুলি।
মহেশখালী থানার ওসি প্রভাষ চন্দ্র ধর যুগান্তরকে জানান, এ আত্মসমর্পণের পর মহেশখালী সম্পূর্ণ সন্ত্রাসমুক্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আত্মসমর্পণ উপলক্ষে সমাবেশ সফল করার জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
রাতে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন যুগান্তরকে জানান, শনিবার সকাল পর্যন্ত সন্ত্রাসীরা আত্মসমর্পণে তালিকাভুক্তি হওয়ার সুযোগ পাবে। যারা আত্মসমর্পণ করবে তাদেরকে প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে জনপ্রতি ৫০ হাজার টাকা করে নগদ অনুদান দেয়া হবে। পরবর্তীতে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার জন্য তাদেরকে চেকের মাধ্যমে আরও টাকা দেয়া হবে অনুদান হিসেবে।
এবার কক্সবাজারের মহেশখালী, কুতুবদিয়া, পেকুয়া ও চকরিয়ার জলদস্যুরা আত্মসমর্পণের সুযোগ পাবে। তাছাড়া বাঁশখালীর জলদস্যুরাও ইচ্ছা করলে আত্মসমর্পণ করতে পারবে। যারা এ সুযোগ পেয়েও আত্মসমর্পণ করবে না সে সব সন্ত্রাসীদের জন্য কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন