গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে স্বামীর প্রথম বিয়ের খবর শুনে ৩৩ দিন বয়সী সন্তানকে ফেলে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছিলেন গৃহবধূ আদুরী বেগম (২১)। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার (১৬ নভেম্বর) বিকেলে তিনি মারা গেছেন।
আদুরীর স্বামী মিজানুর রহমান তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবার জানায়, প্রথম স্ত্রী ও দুই ছেলে সন্তানের কথা গোপন রেখে বছর খানেক আগে ভালোবেসে আদুরীকে বিয়ে করেন মিজান। এরই মধ্যে আদুরীর এক ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। বিয়ের পর থেকে বাবার বাড়িতে ছিলেন আদুরী। সেখানে যাতায়াত ছিল মিজানের।
বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়িতে আসতে স্বামীকে চাপ দেন আদুরী। কিন্তু নানা টালবাহানা করে স্ত্রীকে বাড়ি নিতে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন মিজান। ১০ দিন আগে স্বামী মিজানের ফুফা আইনুল হকের বাড়িতে আসেন আদুরী। আইনুল হকের বাড়ি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায়। সেখান থেকে শনিবার বিকেলে স্বামীর বাড়িতে আসেন আদুরী। বাড়িতে আসার পর থেকে স্বামীর সঙ্গে শুরু হয় বাগবিতণ্ডা। পরে প্রতিবেশিরা উভয়কে শান্ত করেন।
কিন্তু বাগবিতণ্ডার জের ধরে রাতেই রাগে-ক্ষোভে নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন আদুরী। গত ২ নভেম্বর রাত সাড়ে ১১টার দিকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় স্বজনরা আদুরীকে উদ্ধার করে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে পরদিন দুপুরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। দীর্ঘ ১৩ দিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার পরে গতকাল শনিবার বিকেলে মৃত্যু হয় তার।
সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম আবদুস সোবহান জানান, গায়ে আগুন দিয়ে আত্নাহত্যার চেষ্টাকারী গৃহবধূর ঢাকাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে। মিজানুরের বাড়িতে লাশ আনা হয়েছে খবর পেয়ে আমরা পরির্দশন করেছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আদুরী বেগম সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের রামধন গ্রামের মিজানুর রহমান মিজানের (২৮) দ্বিতীয় স্ত্রী। আদুরীর বাড়ি কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায়।
পূর্বপশ্চিমবিডি
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন