বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে মারধরে ১১ জন সরাসরি জড়িত ছিলেন। তবে সবচেয়ে বেশি মেরেছেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার। দুই দফায় স্টাম্প দিয়ে অন্তত ১০০ বার আঘাত করেন। অনিক সরকারের মারের পরই আবরার বমি ও প্রস্রাব করে দেন।
গত ১৩ নভেম্বর আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২৫ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা ও অপরাধতথ্য শাখা (ডিবি)। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ডিবির পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জমান আদালতে এই অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে অনিক সরকার সম্পর্কে এমনটাই বলা হয়েছে। অভিযোগপত্রের একটি অংশ এনটিভি অনলাইনের হাতে এসেছে।
‘প্রথমে স্টাম্প দিয়ে ৫০-৬০ বার আঘাত’
আদালতে দেওয়া অভিযোগপত্রে ওয়াহিদুজ্জমান বলেন, ইফতি মোশাররফ সকাল প্রথমে আবরারকে চড়-থাপ্পড় মেরে স্টাম্প হাতে নিয়ে আবরারের পিঠে, পায়ে, হাতে, নিতম্বসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত শুরু করে। তখন ইফতির হাতে থাকা স্টাম্পটি ভেঙে দুই টুকরো হয়ে যায়।
এরপর আসামি এহতেশামুল রাব্বি আরেকটি স্টাম্প নিয়ে আসলে অনিক সরকার সেটি দিয়ে আবরারের শরীরের বিভিন্ন স্থানে জোরে জোরে একাধারে ৫০/৬০ বার আঘাত করে। এতে আবরার মেঝেতে পড়ে যায়। সে সময় বাঁচার চেষ্টায় মিনতি করেও রক্ষা পাননি আবরার। রাত ১১টার পর মেহেদী ও অনিক ২০১১ নম্বর রুম থেকে বের হওয়ার সময় অন্যদের বলে- ‘তোরা তাঁর (আবরার) কাছ থেকে তথ্য বের কর।’
‘দ্বিতীয়বার অনিক আরো ৪০-৫০ বার আঘাত করে’
অনিক আবার ২০১১ নম্বর রুমে এসে দ্বিতীয় দফায় স্টাম্প দিয়ে আবরারের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আরো ৪০ থেকে ৫০ বার আঘাত করে। একপর্যায়ে আবরার বমি ও প্রস্রাব করে দেন এবং বাঁচার জন্য ইশারা-ইঙ্গিতে আকুতি-মিনতি করেন।
পরে ইফতি ও মেহেদীর নির্দেশে নাজমুস সাদাত, শামীম বিল্লাহ, শামসুল আরেফিন, আকাশ, মোয়াজ আবু হোরায়রা, মুনতাসির আল জেমি ও এহতেশামুল রাব্বি আবরারের মৃতদেহ ২০০৫ নম্বর রুমে নিয়ে যায় এবং আসামি ইফতি ‘মেস বয়’ জাহিদ হাসান জনিকে ডেকে ২০১১ নম্বর রুম পরিষ্কার করায়।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন