ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার পাঁচুড়িয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ চর নারানদিয়া গ্রামে ভাঙন কিছুটা কমেছে। পানি ও ভাঙন কমলেও চোখের পানি কমেনি মধুমতিপাড়ের মানুষের।
এলাকাবাসীর দাবি, শুষ্ক মৌসুমে ভাঙনকবলিত এলাকায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করে এলাকাবাসীকে নিঃস্ব হওয়া থেকে বাঁচানো হোক।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দক্ষিণ চর নারানদিয়া এলাকায় ভয়াবহ নদী ভাঙনে বসতভিটা ও ফসলি জমি সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে প্রায় শতাধিক পরিবার। মধুমতির হিংস্র থাবায় লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে সেই সব পরিবারের সংসার। সব হারিয়ে একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজতে দিশেহারা হয়ে ছুটছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো। এখনও জমির সন্ধানে তারা খেয়ে না খেয়ে মধুমতির পাড়ে বসে আছেন।
নদীর পাড়ে খোলা আকাশের নিচে বসে চোখের পানি ফেলছিলেন দক্ষিণ চর নারানদিয়া গ্রামের বৃদ্ধা দিপালী রাজবংশী। তিনি জানান, ‘আমরা মাঝি মানুষ। নদীতে মাছ মাইরে আমাগো সংসার চলে। সেই কষ্টের সবকিছু নদীতে চইলে গেছে’।
খোরশেদ সর্দার নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘এবছর নদীতে আমার বাড়ি ভেঙে গেছে। নতুন করে বাড়ি করব সেই জমিও নেই, আর সামর্থ্যও নেই। বর্তমানে পাশের এক বাড়িতে থাকি।’
অপরদিকে ভাঙন থেকে বেঁচে যাওয়া নদী তীরের বাকি পরিবারগুলো প্রতিনিয়তই আতঙ্কে নিদ্রাহীন রাত কাটাচ্ছেন। হুমকিতে রয়েছে দক্ষিণ চর নারানদিয়া গ্রাম।
গ্রামের অপর এক বাসিন্দা ইকরাম মিয়া বলেন, ‘নদী ভাঙনের যন্ত্রণা কত নির্মম হতে পারে- এ অঞ্চলের মানুষ তার জ্বলন্ত উদাহরণ।’
সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এমএম জালালউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এই এলাকায় যদি স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হয়- তাহলে গ্রামটি রক্ষা পাবে। আশা করি, সরকার এই এলাকায় বাঁধ নির্মাণে দৃষ্টি দেবেন’।
ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (এসডিই) সন্তোষ কর্মকার জানান, তাৎক্ষণিকভাবে পশ্চিম ও দক্ষিণ চর নারানদিয়া এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। সারাদেশেই নদী ভাঙন আছে, তাই দ্রুত কোনো প্রকল্প নেওয়া সম্ভব না। তবে ভাঙন এলাকায় স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এ ব্যাপারে হিসাব-নিকাশ করে প্রস্তাবনা পাঠানো হবে।’
(ঢাকাটাইমস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন