অবিশ্বাস্য হলেও সত্য বগুড়ায় একই পরিবারের ১৪ জন জন্মান্ধ। বাবা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হওয়ায় তার সন্তান এবং নাতি নাতনিদেরও একই অবস্থা। এ প্রতিবন্ধীদের পরিবার চলে ভিক্ষাবৃত্তি করে। সম্প্রতি ১০ জনের নামে প্রতিবন্ধী কার্ড হয়েছে। সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ তাদের এক বছরের খাবার ও জামাকাপড় দিয়েছেন। আর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি তাদের বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
বগুড়া শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে সোবাহানপুর গ্রাম। অবিশ্বাস্য হলেও এখানকার জন্মান্ধ আব্দুল জব্বারের বংশের ৬ পরিবারের ২০ জনের মধ্যে ১৪ জনই জন্ম থেকেই অন্ধ। বাধ্য হয়েই তারা বেছে নিয়েছে ভিক্ষাবৃত্তি। কষ্ট আর নানা বঞ্চনার মধ্যে বছরের পর বছর ধরে চলছে পরিবারগুলো।
পরিবারের একজন বলেন, আমার দাদা-দাদি অন্ধ ছিলেন। আমার বাবা এবং আমাদের সব ভাইবোনও অন্ধ হয়ে জন্ম নিয়েছে। আমরা ভিক্ষা করে চলি। অনেকের অনেক কথা শোনা লাগে। আমরা সরকারের সাহায্য চাই।
মৃত আব্দুল জব্বারের ৭ ছেলেমেয়ের মধ্যে ৬ জনই অন্ধ। এ অন্ধ ৬ জনের সন্তানদের মধ্যে ৮ জনই আবার অন্ধ হয়ে জন্ম নিয়েছে। স্বাভাবিক জীবনযাত্রা তাদের অচল দিনের পর দিন।
তারা বলেন, আমাদের লেখাপড়া করতে ইচ্ছা করে। কিন্তু তা সম্ভব নয়। চোখে দেখি না বলে কেউ আমাদের স্কুলে ভর্তি করায় না। নতুন পোশাক পরতে পারি না। আমাদের সঙ্গে কেউ খেলতেও চায় না।
অন্ধ পরিবারের বিষয়টি জানেন উল্লেখ করে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মেদ রিজু বলেন, তাদের পরিবারের ১০ জনকে প্রতিবন্ধীর আওতায় আনা হয়েছে। বাকিদেরও আনা হবে। তাদের কোথায় জায়গা দিলে ভালো রাখা যাবে সে চেষ্টা চলছে।
গত ৪০ বছর ধরে বংশানুক্রমে ভিক্ষাবৃত্তি করে আসছিল পরিবারগুলো। তবে ভিক্ষা বৃত্তি যেন না করে সে জন্য বগুড়া ৬ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম মো. সিরাজ অন্ধ পরিবারগুলোকে এক বছরের জন্য খাবার এবং জামা কাপড় দিয়েছেন। আর গত ঈদে বগুড়ার পুলিশ সুপার তাদের জামাকাপড় দেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন