একুশে পদকপ্রাপ্ত দেশবরেণ্য চিত্রশিল্পী কালিদাস কর্মকার আর নেই। কালিদাস কর্মকারকে তার ঢাকার বাসা থেকে শুক্রবার দুপুরে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ল্যাবএইড হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। তিন দুই কন্যাসহ আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
চিত্রশিল্পী কালিদাস কর্মকারের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক শোকবার্তায় তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই চিত্রশিল্পী তার চিত্রকর্মে আবহমান বাংলার স্বরূপ প্রকাশের পাশাপাশি নিরীক্ষাধর্মী শিল্পকর্মের জন্য শিল্পী মহলে বিশেষভাবে সমাদৃত হয়েছেন। তার কর্ম নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রেরণা জুগিয়ে যাবে।
প্রধানমন্ত্রী তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
গ্যালারি কসমসের নির্বাহী শিল্প ব্যবস্থাপক ও চিত্রশিল্পী সৌরভ চৌধুরী যুগান্তরকে জানান, কালিদাস কর্মকার বেলা ১টার দিকে বাথরুমে গোসল করতে গিয়ে পড়ে যান। অচেতন অবস্থায় দেখতে পেয়ে পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে নিয়ে যায়। আনুমানিক আড়াইটার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শিল্পীর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে সংস্কৃতি অঙ্গনে।
সৌরভ চৌধুরী জানান, কালিদাস কর্মকারের দুই মেয়ে কেয়া কর্মকার ও কঙ্কা কর্মকার যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন। তারা দেশে আসার পর শেষকৃত্যের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সেই পর্যন্ত তার মরদেহ বারডেমের হিমাগারে রাখা হবে।
দেশে আধুনিক চিত্রকর্মে কালিদাস কর্মকার অন্যতম এক নাম। ১৯৪৬ সালে বৃহত্তর ফরিদপুরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। কালিদাসের বাবা হীরালাল কর্মকার ও মা রাধারানী কর্মকার। শৈশব থেকেই তিনি চিত্রকলার সঙ্গে যুক্ত। একসময় ভর্তি হন তৎকালীন চারুকলা ইন্সটিটিউটে।
পরবর্তীতে ১৯৬৯ সালে কলকাতার গভর্নমেন্ট কলেজ অব ফাইন আর্টস অ্যান্ড ক্রাফট থেকে প্রথম বিভাগে প্রথম স্থান নিয়ে চারুকলায় স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। দেশ-বিদেশে আয়োজিত শিল্পী কালিদাসের একক চিত্র প্রদর্শনীর সংখ্যা ৭১টি।
ভারত, পোল্যান্ড, ফ্রান্স, জাপান, কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্রে আধুনিক শিল্পের বিভিন্ন মাধ্যমে উচ্চতর ফেলোশিপ নিয়ে সমকালীন চারুকলার নানা মাধ্যমে তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। জীবদ্দশায় তিনি একুশে পদক, শিল্পকলা পদকসহ অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন