বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে দেখভাল করছেন, তাই এ বিষয়ে এখনই কোনও হস্তক্ষেপ করতে চান না বলে জানিয়েছেন পৃথক তিনটি হাইকোর্ট বেঞ্চ।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) আবরার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও তার পরিবারকে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে করা রিটের শুনানি করতে গেলে পৃথক তিনটি হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব মন্তব্য করেন। প্রথমে এই রিটের ওপর শুনানি করতে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে উপস্থাপন করা হলে আদালত শুনানি গ্রহণ করতে অপরাগতা প্রকাশ করেন।
এরপর রিট মামলাটি বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের বেঞ্চে এবং সবশেষে আবেদনটি বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চে উপস্থাপন করা হলে তারাও রিটের শুনানি করতে অপরাগতা প্রকাশ করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানির জন্য উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ কে এম ফায়েজ। রিট মামলাটির শুনানির জন্য পর পর তিনটি বেঞ্চে শুনানির চেষ্টা করেও সফল হননি রিটকারী আইনজীবী।
রিটের শুনানি না নেওয়ার বিষয়ে অপরাগতা জানিয়ে বেঞ্চের বিচারকরা মন্তব্য করেন, আবরার হত্যা ঘটনার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী নিজে দেখভাল করছেন বলে এ বিষয়ে রিট নিয়ে শুনানি এখনই নয়। এক পর্যায়ে আদালত রিটকারীর আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, ‘অপেক্ষা করুন। দেখুন কী হয়। না হলে পরে আসবেন।’
এর আগে গত ১৩ অক্টোবর আবরারের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে আইনজীবী শাহিন বাবুর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ কে এম ফায়েজ এ রিট দায়ের করেন।
রিটে আবরারের মৃত্যুর ঘটনায় বুয়েট কর্তৃপক্ষের কাছে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়। এই ক্ষতিপূরণের পুরো টাকা বুয়েট কর্তৃপক্ষকে পরিশোধের আদেশ চেয়েও আবেদন জানানো হয় রিটে। এছাড়াও রিটে আবরারের মৃত্যুর ঘটনায় বুয়েট কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতাকে চ্যালেঞ্জ করা হয়। এই রিটের আদেশ হলে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিংয়ের শিকার শিক্ষার্থীদের জন্যও ক্ষতিপূরণ আদায় করা সম্ভব হবে বলেও রিটে উল্লেখ করা হয়।
এছাড়াও রিটে আবরারের হত্যার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন এবং আবরাবের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশনাও চাওয়া হয়।
রিটে বুয়েট কর্তৃপক্ষ ছাড়াও শিক্ষা মন্ত্রণালয় সচিব সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ৬ অক্টোবর রাতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরে বাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বুয়েটের ১৭তম ব্যাচের ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র আবরার ফাহাদ রাব্বীকে। ওই দিন রাত তিনটার দিকে হলের দ্বিতীয় তলার সিঁড়ি থেকে আবরারের মরদেহ উদ্ধার করে কর্তৃপক্ষ। আবরারকে হত্যার ঘটনায় তার বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় ১৯ জনকে আসামি করা হয়েছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন