সামরিক জান্তার অত্যাচারের শিকার হয়ে মায়ানমার থেকে বাংলাদেশে সাময়িক আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে ২৩৫টি পরিবারের সাক্ষাৎকার গ্রহন করে তাদের নিজ দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল গতকাল বুধবার থেকে। কিন্তু আজ বৃহস্পতিবার সাক্ষাৎকার গ্রহণ শেষে সেই পরিবারগুলো মিয়ানমার ফিরে যেতে অস্বীকৃতি জানায়। রোহিঙ্গাদের এমন অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে দ্বিতীয় দফায় প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেও তা সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে তাৎক্ষনিক এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম এ মোমেন গণমাধ্যমে জানান, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পরে ফিরে যাওয়ার জন্যে কাওকে না পাওয়াটা দুঃখজনক। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন একেবারে বন্ধ করা হয়নি, সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে।
প্রত্যাবাসন কর্মকর্তা মিঃ কামাল জানান, সাক্ষাৎকার যাদের নেওয়া হয়েছিলো তারা কেউ যেতে রাজী না হওয়ায় আপাতত এই কার্যক্রম বন্ধ। কবে নাগাদ আবার প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া চালু হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা এক সপ্তাহ পরে শুরু হতে পারে আবার এক মাসও লেগে যেতে পারে। তবে, প্রত্যাবাসনের জন্যে রোহিঙ্গা পরিবারগুলোর সাক্ষাৎকার গ্রহণ চলবে।
উল্লেখ্য, প্রত্যাবাসন এর তালিকাভুক্ত থাকা ২৩৫ রোহিঙ্গা পরিবারের সাক্ষাৎকার শেষ হয়েছে। গত মঙ্গলবার ও বুধবার দুইদিন ধরে তাদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়েছিলো।
কক্সবাজারের টেকনাফের শালবাগান রোহিঙ্গা শিবিরে মঙ্গলবার ও বুধবার সকাল ১০ টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত এ সাক্ষকার গ্রহণ করা হয়ে। ইউএনএইচসিআর এবং শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের প্রতিনিধিরা ক্যাম্পে গিয়ে এসব রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎ নেন।
সব কিছু প্রস্তুত থাকা সত্বেও আজ যাবার আগে ঐ পরিবারগুলো যেতে অস্বীকৃতি জানায়। তাদের এই সিদ্ধান্তের পরে জোর করে কাওকে না পাঠিয়ে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া আপাতত বন্ধ ঘোষণা করে প্রত্যাবাসন কমিশন। প্রসঙ্গত,২০১৭ সালে ২৫ আগস্ট রাখাইনের ৩০টি নিরাপত্তা চৌকিতে একযোগে হামলার ঘটনা ঘটে। প্রতিক্রিয়ায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন শুরু করে। ফলে প্রাণ বাঁচাতে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। পুরনোসহউখিয়া-টেকনাফের ৩০টি শিবিরে এখন ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। তবে জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, এই সংখ্যা ১১ লাখ ৮৫ হাজার ৫৫৭। তাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি।
বাংলা ইনসাইডার
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন