বর্তমান সময়ে সব ধরনের অপরাধের সঙ্গে দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যুক্ত বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।
তিনি বলেছেন, ‘বর্তমান সময়ে এমন কোনও অপরাধ নেই, যার সঙ্গে কোনও না কোনও ভাবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার যুক্ত থাকার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের একাংশের যোগসাজশ পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতার দৃষ্টান্ত এখন অহরহ সংবাদমাধ্যম ও বিভিন্নভাবে উঠে আসছে।’
ইফতেখার বলেন, ‘বাংলাদেশে এমন আমরা পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে আমরা যাচ্ছি, যেখানে আইনের রক্ষকরাই আইনের ভক্ষক হয়ে উঠেছেন। এভাবে চললে কিছুদিন পরেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নাম পরিবর্তন করে আইন লঙ্ঘনকারী সংস্থা রাখতে হবে। আমরা এই অবস্থা থেকে মুক্তি চাই।’
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) বেলা ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ (এইচআরএফবি) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
জাতিসংঘের নির্যাতনবিরোধী কমিটির সুপারিশসমূহের কার্যকর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
বক্তব্যে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘অপরাধ নির্মূল কিংবা প্রতিরোধ করাই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাজ। অথচ তাদের একটি অংশ কোনও না কোনও ভাবে অপরাধের সঙ্গে যুক্ত। এসবের প্রতিকারের জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন। যারা এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।’
এর জন্য রাজনৈতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক পর্যায় থেকে এমন অঙ্গীকার করতে হবে। কারও ওপর দয়া-করুণা না করে অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করা হলে তবেই অপরাধ প্রবণতা কমবে। অন্যথায় অঙ্গীকার করার কোনও অর্থ নেই।’
তিনি মনে করেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বিরুদ্ধে যে অপরাধগুলোর অভিযোগ উত্থাপিত হয়, সেগুলোর বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ তদন্ত করা প্রয়োজন।
টিআইবি’র এই নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, ‘যেসব আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা অপরাধের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নামে বদলি করা হয়, বড়জোর অবসরে পাঠানো হয়। এটা তো কোনও শাস্তি হতে পারে না। এটা তো অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিকে পুরস্কৃত করা। কারণ অবসরে গেলেও ওই কর্মকর্তা সব ধরনের সুযোগ-সুবিধাই পেয়ে থাকেন। আর বদলি হতে তো কোনও কথাই নেই। এসব বিষয়ের যথাযথ বিচার বিভাগীয় তদন্ত না হলে মানুষের মনে আস্থা ফিরবে না।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, বাংলাদেশের বেসরকারি সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম ইন বাংলাদেশের (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন ও আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন