পাস্তুরিত তরল দুধ নিয়ে গবেষণা করে এতে অ্যান্টিবায়েটিকের উপস্থিতির কথা জানিয়ে বিপাকে পড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফার্মেসি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও বায়োমেডিক্যাল রিসার্স সেন্টারের সদ্য সাবেক পরিচালক অধ্যাপক আ ব ম ফারুকের পক্ষে দাঁড়ালেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান।
তিনি বলেছেন, ‘অধ্যাপক আ ব ম ফারুক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে এ ধরনের জনকল্যাণমূলক গবেষণা পরিচালনা করেছেন। তার পক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তো আছেই, পাশাপাশি আছে সমগ্র জাতি। তিনি তো ঢাবির অধ্যাপক হিসেবেই গবেষণার পর ফল প্রকাশ করেছেন। এজন্য তাকে আমরা ধন্যবাদ জানাই।’
সম্প্রতি অধ্যাপক আ ব ম ফারুক বাজার থেকে পাস্তুরিত তরল দুধের নমুনা নিয়ে গবেষণা করেন। এ গবেষণায় কয়েকটি ভিন্ন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতি পান তিনি, যা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জনসম্মুখে তুলে ধরেন। এতে বিভিন্ন মহলে তার পক্ষে-বিপক্ষে মতামত তৈরি হয়। খোদ ফার্মেসি বিভাগ এর দায় নিতে নারাজি প্রকাশ করে।
বিষয়টি নিয়ে শেষ পর্যন্ত কথা বললেন ঢাবি উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান। মঙ্গলবার দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘অধ্যাপক ফারুক একজন স্ট্যান্ডার্ড মানের গবেষক। তিনি জনস্বার্থেই গবেষণাটি করেছেন। একজন গবেষক হিসেবে তিনি তার মৌলিক দায়িত্বই পালন করেছেন। এটি নিয়ে বিতর্ক তোলার আগে এই গবেষণা মানের আরেকটি গবেষণা করা উচিত ছিল।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক ফারুকের পাশে থাকবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘গত ২৫ জুন বাজারের কয়েকটি কোম্পানির দুধ এবং গুঁড়া মসলার নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। এ গবেষণার নেতৃত্বে ছিলেন আ ব ম ফারুক। তিনি জনস্বার্থে গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করলে তা নিয়ে সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে তাকে হুমকি-ধমকি দেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অনেক শিক্ষক অধ্যাপক ফারুকের পাশে দাঁড়িয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজই হলো গবেষণা করা। এখানে প্রচুর গবেষণা হবে। বিশেষ করে এখানে জনস্বার্থে গবেষণা হওয়া বেশি জরুরি। জনস্বার্থে এ ধরনের গবেষণা করা বিশ্ববিদ্যালয়েরও মৌলিক দায়িত্ব। আ ব ম ফারুকও তেমনি একজন গবেষক, যার সে ধরনের গবেষণা করার স্ট্যান্ডিং মানও রয়েছে।’
‘তিনি মৌলিক ধারার মানুষ, অনেক আগে থেকেই বিভিন্ন খাদ্যের মান নিয়ে কথা বলে আসছেন। যখনই কোনো বিষয় নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়, তখন তিনি চমৎকার কথা বলেছেন। এটা মূলত তার অধিকার। ফলে তিনি যে গবেষণা করেছেন, সে গবেষণার ফলটি প্রকাশ করেছেন। এটাই তো তার কাছে প্রত্যাশিত। কারণ, তিনি সৎ সাহস নিয়ে এ ধরনের গবেষণা করেছেন।’
উপাচার্য বলেন, ‘এ গবেষণাটি নিয়ে যারা বিতর্ক করছেন, তাদের উচিত ছিল, পাল্টা আরেকটি গবেষণা করে এরপর কথা বলা। তখন গবেষণাটি সম্পর্কে ধারণা করা যেতো। কিন্তু তা না করে গবেষণার ত্রুটি খোঁজা কোনোভাবেই কাম্য নয় এবং এটিকে বিতর্কিত করলে আমাদের কোনোমতে আপস করা ঠিক হবে না।আস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন