অর্থনীতির নানা খাতে ব্যাপক সংস্কার আর বিভিন্ন ক্ষেত্রে উদ্ভাবনী নতুনত্ব নিয়ে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট চূড়ান্ত করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অর্থমন্ত্রী হিসাবে নিজের জীবনের প্রথম এ বাজেট দেশের ইতিহাসে স্মরণীয় করে রাখতে একেবারে নতুন রুপে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় সংসদে হাজির হবেন তিনি। গতানুগতিক ৫ বছরের বাজেট না দিয়ে এবারের বাজেটে ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার একটা রোডম্যাপ দিবেন অর্থমন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
ইতিমধ্যে ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছেন। তবে এ বাজেটে বিভিন্ন খাতে ব্যাপক সংস্কারের প্রস্তাব করবেন অর্থমন্ত্রী।
বাজেটে যেসব খাতে ব্যাপক সংস্কারের প্রস্তাব করবেন অর্থমন্ত্রী সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- ব্যাংকিং খাত, পুঁজিবাজার, সঞ্চয়পত্র ও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি। তবে সামগ্রিকভাবে করমুক্ত রাখা হবে জনগণকে। এতে আরও ঘোষণা থাকবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির।
এবারের বাজেটে কিছু নতুন উদ্যোগও রাখছেন অর্থমন্ত্রী। এক্ষেত্রে প্রথমবারের মতো উদ্যোগ থাকবে শিক্ষিত তরুণ বেকারদের জন্য স্টার্ট আপ ফান্ড নামে ঋণ তহবিল। এ তহবিল থেকে স্বল্পসুদে সহজ শর্তে ঋণ নিয়ে ব্যবসা কবতে পারবেন বেকাররা।
এ ছাড়া বাজেটে কৃষকের জন্য ‘পাইলট প্রজেক্ট’ হিসেবে চালু করা হবে শস্যবীমা। এ প্রজেক্টের আওতায় প্রাথমিকভাবে বেছে নেয়া হবে একটি জেলাকে। পরবর্তী সময়ে এটি ছড়িয়ে দেয়া হবে সারা দেশে।
এ ছাড়া নতুন উদ্যোগের মধ্যে থাকছে প্রবাসীদের জন্য বীমা সুবিধা। বর্তমানে বিদেশে ৭০-৮০ লাখ প্রবাসী অবস্থান করছেন। আর প্রতিবছর নতুন করে দেশের বাইরে চাকরিতে যাচ্ছেন ৫-৭ লাখ মানুষ। এদের বীমা সুবিধার আওতায় আনা হবে।
কারণ অনেকে বিদেশে গিয়ে চাকরি হারাচ্ছেন, দুর্ঘটনায় পঙ্গু ও নিহত হচ্ছেন। এ ছাড়া নানাভাবে প্রতারণার শিকার হয়ে দেশে ফিরছেন। এসব ঝুঁকির কারণেই তাদের বীমার আওতায় আনা হবে।
নতুন বাজেটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী পালনের প্রতিফলন থাকবে। আর বেশি মনোযোগ থাকবে নির্বাচনী ইশতেহার অনুসারে ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে। দেশের প্রতিটি গ্রামকে শহরে রূপান্তর করার ঘোষণা থাকবে বাজেটে।
এতে পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা হবে গ্রামকে। যেখানে ইন্টারনেট, বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ সব ধরনের নাগরিক সুবিধা পৌঁছে দেয়া হবে। আমার গ্রাম আমার শহর- এ কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য দায়িত্ব থাকবে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের। তবে প্রত্যেক মন্ত্রণালয়কে এ কাজে সম্পৃক্ত করা হবে।
বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৮ দশমিক ২০ শতাংশ। চলতি অর্থবছর ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ অর্জন হবে- এমন প্রত্যাশা থেকেই আগামী অর্থবছরের এ লক্ষ্য স্থির করা হচ্ছে। সার্বিকভাবে শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ চাহিদার পাশাপাশি রফতানি ও রাজস্ব আয়ের গতিশীলতার কারণে এ প্রবৃদ্ধি অর্জন সহায়ক হবে। নতুন বাজেটে মূল্যস্ফীতি ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন