ঈদ বাজারের টাকা দেওয়ার কথা বলে সুমনা বেগম (৪৪) নামে এক নারীকে ডেকে নেন তার তৃতীয় স্বামী মুহিবুর রহমান বেলাল। পরে টাকা দিয়ে চলেও যান তিনি। এরপরই ওই নারীকে উপর্যুপরি কুপিয়ে রক্তাক্ত করেন বেলালের প্রথম স্ত্রীর ছেলে ইমন।
গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১০টায় সিলেট নগরের পাঠানটুলা এলাকায় সানরাইজ কমিউনিটি সেন্টারের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে শাহনুর মিয়া নামের এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
সুমনা বেগমের প্রথম স্বামীর মেয়ে ফাইজা আক্তার বলেন, ঈদের বাজারের জন্য টাকা দেওয়ার কথা বলে মাকে পাঠানটুলা স্কুলের সামনে যেতে বলেন তার তৃতীয় স্বামী মুহিবুর রহমান বেলাল। তিনি বাজারের টাকা হাতে দিয়ে চলে যান। এরপরই ঘটনাস্থলের পাশে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা বেলালের প্রথম স্ত্রীর ছেলে ইমনের নেতৃত্বে চার-পাঁচজনের একটি দল মায়ের ওপর হামলা চালায়।
পরে স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে সিলেট এমএমজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় রাত ১২টার দিকে ওসমানী হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠান।
ফাইজা আক্তার বলেন, জমিসংক্রান্ত বিরোধ ও পারিবারিক নানা সমস্যার কারণে ইমন, শাহনুর, শাকিল, জয়নাল আবেদীন ও রুনার নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়েছে। এর আগেও মাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিল ইমন। তখন মা কোর্টে মামলা করার জন্য গেলে ইমন ও তার বাবা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এরপর মা ভয়ে মামলা করার সাহস পাননি।
তিনি আরও বলেন, ‘মুহিবুর রহমান বেলালের সঙ্গে মায়ের তৃতীয় বিয়ের পর আবার দুই ভাই ও এক বোনের জন্ম হয়। কিন্তু তিনি আমার ভাই-বোনদের বাবার স্বীকৃতি দেননি। উল্টো মাসহ আমাদেরকে হুমকি-ধামকি দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেন। বেলালের প্রথম পক্ষের স্ত্রী ও তার ছেলে ইমন এতে সহযোগিতা করেন। এখন আমরা নিরুপায় হয়ে বিমানবন্দর এলাকার জাহাঙ্গীর গ্রাম এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করছি।’
এদিকে ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নন বলে দাবি করেছেন তৃতীয় স্বামী মুহিবুর রহমান বেলাল। তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে হামলার জন্য ছেলে ইমনকে দায়ী করেছেন।
এ ব্যাপারে সিলেট কোতোয়ালি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সেলিম মিঞা বলেন, জায়গা-জমি ও পারিবারিক বিরোধের কারণেই ওই নারীর ওপর হামলা হয়েছে। সুমনা বেগমের হাতের রগ কেটে গেছে। আশঙ্কাজনকভাবে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে আটক করা হয়েছে। তার স্বামী বেলালও পুলিশের নজরদারিতে রয়েছে। অন্য আসামিদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে বলে জানান মোহাম্মদ সেলিম।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন