বিচারাধীন বিষয়ে সংবাদ পরিবেশনে বিরত থাকা সংক্রান্ত বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের দেওয়া নির্দেশনা আরও স্পষ্ট করা প্রয়োজন বলে মনে করে এডিটরস গিল্ড, বাংলাদেশ।
দেশের সব ধরনের সংবাদমাধ্যমের সম্পাদকীয় নেতৃত্ব নিয়ে গড়ে ওঠা সংগঠনটি রবিবার (১৯ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, নির্দেশনাটি যে ভাষায় দেওয়া হয়েছে, তা অনুসরণ করতে গেলে বিচারাধীন কোনও মামলার কোনও বিষয়েই সংবাদ পরিবেশন করা যাবে না।
গত বৃহস্পতিবার (১৬ মে) বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে বিচারাধীন বিষয়ে সংবাদ পরিবেশনে বিরত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার মো. গোলাম রব্বানী স্বাক্ষরিত ওই নির্দেশনায় বলা হয়, ‘ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, কোনও ইলেকট্রনিক মিডিয়া তাদের চ্যানেলে এবং কোনও কোনও প্রিন্ট মিডিয়া তাদের পত্রিকায় বিচারাধীন মামলাসংক্রান্ত বিষয়ে সংবাদ পরিবেশন/স্ক্রল করছে, যা একেবারেই অনভিপ্রেত। এমতাবস্থায়, বিচারাধীন কোনও বিষয়ে সংবাদ পরিবেশন/স্ক্রল করা থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’
এডিটরস গিল্ড, বাংলাদেশ-এর সভাপতি তৌফিক ইমরোজ খালিদী স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্দেশনাটি যে ভাষায় দেওয়া হয়েছে, তা অনুসরণ করতে গেলে বিচারাধীন কোনও মামলার কোনও বিষয়েই সংবাদ পরিবেশন করা যাবে না। আদালতে শুনানিকালে বিচারক ও আইনজীবীদের মধ্যে যে কথোপকথন (exchanges) হয়, সেগুলো গুরুত্বপূর্ণ বা প্রাসঙ্গিক মনে করলে গণমাধ্যম অনেক সময় তা প্রকাশ করে।
তবে আদালতের কার্যক্রম নিয়ে কোনও ধরনের পর্যবেক্ষণ বা মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার বিষয়ে এডিটরস গিল্ড, বাংলাদেশ একমত পোষণ করে এ বিষয়ে সচেতন থাকতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিভিন্ন আলোচিত মামলার বিচারের অগ্রগতি ও শুনানির সংবাদ গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ ও প্রচার করে এসেছে গণমাধ্যম।
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, শারমিন রীমা হত্যা, শাজনীন হত্যা থেকে শুরু করে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা, জাতীয় চার নেতা হত্যা মামলা, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানিকালে আদালতকক্ষের কর্মকাণ্ডের খবর গণমাধ্যমে সবিস্তারে এসেছে নিয়মিতভাবে।
এডিটরস গিল্ড, বাংলাদেশ বলছে, এতদিন ধরে যেভাবে সংবাদ প্রকাশ ও প্রচার চলে আসছে, সেটাকে ‘ইদানিং’ হিসেবে বর্ণনা করে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের হঠাৎ কেন ওই নির্দেশনা দেওয়া প্রয়োজন হলো, তা স্পষ্ট করা হয়নি। এ অবস্থায় জনসাধারণের কাছে তথ্য পৌঁছে দেওয়ার কাজে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি স্পষ্ট করা প্রয়োজন বলে মনে করে সংবাদমাধ্যমের সম্পাদকীয় নেতৃত্ব নিয়ে গড়ে ওঠা সংগঠনটি।
এডিটরস গিল্ড, বাংলাদেশ-এর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গ— শাসন বিভাগ/নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ, আইনসভা— প্রত্যেক ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। সেই দৃষ্টিকোণ থেকেই আদালত প্রশাসনের নির্দেশনার বিষয়টি স্পষ্ট করা প্রয়োজন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন