আওয়ামী নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের প্রথম ১০০ দিনকে ‘উদ্যম, উৎসাহ ও উচ্ছ্বাসহীন’ বলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার পর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) যে মন্তব্য করেছে তা সঠিক নয় বলে দ্বিমত প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। একইসঙ্গে সিপিডি প্রকাশিত তথ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মন্ত্রী।
তিনি বলেছেন, ‘সিপিডি তাদের কাজ করছে, আমরা আমাদের কাজ করছি।
তারা যে তথ্য দিয়েছে তা মোটেই সঠিক নয়। ’
বুধবার (২৪ এপ্রিল) সচিবালয়ে এক বৈঠক শেষে সাংবদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এ কথা বলেন।
সরকারের ১০০ দিন নিয়ে সিপিডির প্রকাশিত বিভিন্ন তথ্যের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘তাদের (সিপিডি) কাছে যা আছে সেগুলো আগে আমাকে দিতে বলেন। তাদের থেকে আমরা বড়। তাদের কাছে কী আছে সেগুলো আমাদের দিক।’
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার আওয়ামী নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের প্রথম ১০০ দিন উদ্যমহীন, উৎসাহহীন ও উচ্ছ্বাসহীন ছিল বলে এক জরিপ প্রকাশ করে সেন্টার পর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
সিরডাপ মিলনায়তনে ‘বর্তমান সরকারের প্রথম ১০০ দিন’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে সিপিডির ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘নিঃসন্দেহে গত ৮-১০ বছরে অনেকগুলো উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কিন্তু নতুন করে আমরা তেমন আর কিছু দেখছি না। এছাড়া যে সকল উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তাতে আমাদের বিস্ময় রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে সামগ্রিক অর্থনীতিতে এক ধরনের নেতিবাচক চাপ সৃষ্টি হয়েছে। বেশিরভাগ সূচকই নিম্নমুখী। বিশেষ করে বৈদেশিক লেনদেনে যে ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছে, তা আমাদের সোনার সংসারে আগুন লাগিয়ে দিতে পারে।’
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম, এটি একটি বড় ধরনের ১০০ দিনের উত্থানের ওপর প্রতিফলিত হবে। কিন্তু এটা আমরা লক্ষ্য করিনি। আমরা যেটা লক্ষ্য করেছি, গতানুগতিক ধারাবাহিকতা। নতুনভাবে সেরকম কিছু আমরা লক্ষ্য করিনি। বরং যে ধরনের উদ্যোগ আমরা দেখেছি, সে ধরনের উদ্যোগ মিশ্র ইঙ্গিত দিচ্ছে।’
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কী মিশ্র ইঙ্গিত দিচ্ছে? আমরা লক্ষ্য করেছি, বিভিন্ন কর ছাড় দেওয়া হচ্ছে। আমরা দেখেছি, সুদের ক্ষেত্রে বড় ধরনের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এগুলোর ফলে বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নত হবে- এটা আমরা মনে করি না।’
সিডিপির ফেলো আরও বলেন, ‘আমরা সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে দেখছি, প্রবৃদ্ধিনির্ভর অর্থনৈতিক আলোচনা। কেমন একটা প্রবৃদ্ধি-আচ্ছন্নতা বা আকৃষ্টতা আমরা এখানে দেখতে পাচ্ছি। অথচ অর্থনৈতিক তত্ত্বের সাম্প্রতিককালের চিন্তা দেখলে দেখা যাবে, সকলেই বলবে, প্রবৃদ্ধি গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু যথেষ্ট না। এটা অর্থনীতি শাস্ত্রের দ্বৈতজ্ঞান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।’
এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘এজন্য মান উন্নয়নের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। সাম্প্রতিককালে জনগণের জীবনমানের বিভিন্ন সূচকের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ যে বৈশ্বিক ঐক্যমত হয়েছে সেটিও প্রবৃদ্ধির বাইরে গিয়ে অনেক ধরনের পূর্ণাঙ্গ উন্নয়নের ধারণাকে সামনে নিয়ে এসেছে। আমরা প্রবৃদ্ধিনির্ভর আলোচনা করি যেন ওই পূর্ণাঙ্গ উন্নয়নের আলোচনা আমাদের মনোযোগের বাইরে চলে না যায়। সাম্প্রতিককালে আমরা দেশের ভেতর অর্থনৈতিক আলোচনায় এটার গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশ দেখিনি।’
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন