সরকারি কর্মকর্তাকে হুমকি দেয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান মোকলেছুর রহমান বিমান - নয়া দিগন্ত
অনিয়ম ও দুর্নীতির বিভিন্ন ফাঁক-ফোকর ধরে ফেলে সেগুলো সংশোধন করতে বলায় এক সরকারি কর্মকর্তাকে মারধরের হুমকি দিয়েছেন এক যুবলীগ নেতা। ভূক্তভোগী সরকারি কর্মকর্তার নাম মোছাম্মৎ সাবিকুন্নাহার। তিনি নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা। অন্যদিকে হুমকিদাতা যুবলীগ নেতার নাম মোকলেছুর রহমান বিমান। পাশাপাশি তিনি একজন ইউপি চেয়ারম্যানও। ঘটনাটি ঘটেছে নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলায়।
জানা যায়, ভিজিডির পুরোনো সুবিধাভোগীর নাম চলতি চক্র বছরে (২৪মাস) অন্তর্ভূক্তিসহ নানা অনিয়ম ধরায় নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে পিটানোর হুমকি দেন ওই যুবলীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান। অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যানের নাম মোকলেছুর রহমান বিমান। তিনি উপজেলার রনচন্ডি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি। এ ব্যাপারে ওই ভূক্তভোগী কর্মকর্তা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ১০/০৯/২০১৮ তারিখে জারিকৃত পরিপত্রের নিদের্শনা মোতাবেক উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোছাম্মৎ সাবিকুন্নাহার গত ৯ এপ্রিল রনচন্ডী ইউনিয়ন পরিষদে ভিজিডির কার্ড বিতরণ ও খাদ্য মনিটরিং করতে যান। একপর্যায়ে কার্ড বিতরণ করা কালীন সময়ে চিহ্নিত ২০১৫-২০১৬ চক্র বছরের উপকারভোগীদের নামে চেয়ারম্যানকে কার্ড ইস্যু করতে দেখে তিনি অভিযুক্ত চেয়ারম্যানকে ওইসব নাম পরিবর্তন করতে বলেন।
কিন্তু চেয়ারম্যান মোকলেছুর রহমান বিমান ভিজিডির নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করেন। তখন ওই কর্মকর্তা দুইজন বয়স্ক মহিলার কার্ড নিজ আয়ত্তে রেখে খাদ্য বিতরণ মনিটরিং করেন। এ সময় তিনি দেখতে পান- চেয়ারম্যান কার্ডে শুধু উপকারভোগীর টিপসই নিয়ে বিতরণকারীর স্বাক্ষর ছাড়াই তিন মাসের ৯০ কেজির চালের স্থলে দুই মাসের ৬০ কেজি চাল বিতরণ করেছেন।
ভূক্তভোগী উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকার্তা মোছাম্মৎ সাবিকুন্নাহার অভিযোগ করেন, এক সময় চেয়ারম্যান তার সামনে ধূমপান শুরু করেন। পরে বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটের দিকে ৩৫টি পুরানো চক্র বছরের উপকারভোগীদের কার্ড নিয়ে আমি চলে আসি। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে চেয়ারম্যান আমাকে ফোন করে বলে- আপনি কার্ড নিয়ে কেন চলে গেছেন। আপনি কি কার্ডের মালিক? আপনাকে সারারাত ইউনিয়ন পরিষদে বসে থাকতে হবে। ওই কার্ডগুলো আপনাকে ১০ এপ্রিলের মধ্যে বিতরণ করতে হবে। নইলে উপকারভোগী মহিলাদের দিয়ে আপনাকে পেটানো হবো।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যর তদন্ত কমটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে রনচন্ডী ইউনিয়ন পরিষদের অভিযুক্ত চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা মোকলেছুর রহমান বিমান বলেন, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার সাথে সামান্য ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। এটির সমাধান হয়ে গেছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন