দেশের তৈরি পোশাক খাতে সাম্প্রতিক মজুরি বৃদ্ধিকে ‘শুভংকরের ফাঁকি’ বলে অভিহিত করেছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
সংস্থাটি বলেছে, মালিকপক্ষ মূল মজুরি বৃদ্ধির হার ২৩ শতাংশ দাবি করলেও প্রকৃতপক্ষে তা গড়ে ২৬ শতাংশ কমে গেছে। ‘তৈরি পোশাক খাতে সুশাসন: অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরে টিআইবি।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনটি তুলে ধরা হয়।
গবেষণা প্রতিবেদনে টিআইবি বলেছে, আইন অনুযায়ী প্রতিবছর ৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধির সঙ্গে ৩৬ শতাংশ বাড়ানোর কারণে ৭ম গ্রেডে মূল মজুরি দাঁড়ানোর কথা ৫ হাজার ২০৭ টাকা। কিন্তু এই গ্রেডে মূল মজুরি ধরা হয়েছে ৪ হাজার ১০০ টাকা, যা কাঙ্ক্ষিত পরিমাণের চেয়ে ৩৬ শতাংশ কম। এভাবে প্রতিটি গ্রেডে গড়ে ২৬ শতাংশ মূল মজুরি কমেছে।
বছরে ৫ শতাংশ হারে বাড়ানোর পর যে মজুরি দাঁড়ায়, তার সঙ্গে কমিশন গঠন করে বৃদ্ধির হারকে তারা বিবেচনায় নিয়েছে বলে জানায় টিআইবি।
সংস্থাটি জানায়, ভারতে পোশাক খাতে ন্যূনতম মজুরি ১৬০ মার্কিন ডলার, কম্বোডিয়ায় ১৯৭, ফিলিপাইনে ১৭০, ভিয়েতনামে ১৩৬ ও বাংলাদেশে ১০১ ডলার। মাথাপিছু জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) বিবেচনায় বাংলাদেশের মজুরি হওয়া উচিত ২০২ ডলার, যা মাসে ১৭ হাজার টাকার সমান। অথচ এখন আছে ৮ হাজার টাকা।
এসময় টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘রানা প্লাজা ধসের ছয় বছরে পোশাক খাতের ব্যবসা টিকিয়ে রাখার বিষয়টি যতটা গুরুত্ব পেয়েছে, শ্রমিকের কল্যাণ ততটা গুরুত্ব পায়নি। পোশাক কারখানার মালিকেরা রাজনৈতিক সংযোগ ও পোশাক খাতের গুরুত্বের কারণে সরকারকে সুবিধা দিতে রাজি করাতে পারেন।’
তিনি বলেন, ‘ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে পোশাক খাতকে সুবিধা দেয়ার দরকার আছে। তবে শ্রমিকের ক্ষেত্রে প্রত্যাশিত দৃষ্টি দেয়া দরকার।’
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির গবেষণা তুলে ধরেন গবেষক নাজমুল হুদা মিনা। এতে ছয় বছরে পোশাক খাত ও রাষ্ট্রীয় সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধির নানা দিক তুলে ধরা হয়। অনেক ঘাটতিও উঠে আসে প্রতিবেদনে।
সার্বিক মূল্যায়নে টিআইবি বলেছে, ছয় বছরে সমন্বিত উন্নয়নের ফলে কারখানার নিরাপত্তা, তদারকি, মজুরি, সরকারি প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা ইত্যাদি ক্ষেত্রে অগ্রগতি লক্ষণীয়। তবে শ্রমিকের কল্যাণের ক্ষেত্রে নানা চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
ব্রেকিংনিউজ/
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন