প্রসূতি মায়েদের সিজার ও চিকিৎসকদের নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে তোপের মুখে পড়েন আলেম মুফতি কাজী ইব্রাহীম। এ নিয়ে ফেসবুকে লাইভ করে ক্ষমা চেয়েছেন তিনি।
ফেসবুকে লাইভে মুফতি কাজী ইব্রাহীম বলেন, আমি আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে কথা বলেছিলাম। আমি আল্লাহর রহমত নিয়ে কথা বলেছিলাম। বাংলাদেশে সিজার একটি ভয়াবহ চিত্র। জাতিসংঘে এক হাজারে মায়ের মধ্যে ১৫ জনকে সিজার করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে শতকরা ৮০ জন মাকে সিজার করা হয়। এটা বাংলাদেশের জন্য ভয়াবহ চিত্র।
মুসলিম সমাজের মানুষ অনেক বেশি রহমত প্রাপ্ত। আমি শুধু বলতে চেয়েছিলাম সন্তান জন্মদান সকল প্রাণীর জন্য একই রকম। এটা আল্লার রহমতে হয়ে থাকে।
তিনি বলেন, আল্লাহ পৃথিবীতে মানুষকে আসার পথকে সহজ ও সাবলীন করেছেন। এটা জটিল নয়। আল্লাহ নিজে দায়িত্ব নিয়েছেন, মা যখন সন্তান প্রসব করবেন তখন তা আল্লাহ সহজ ও বাসলীন করে দিয়েছেন।
নিজের বক্তব্যের পক্ষে সমর্থন জানিয়ে তিনি আরো বলেন, নারী জাতিকে ঢেকে রাখার কথা আল্লাহ বলেছেন। পোশাক পরা উলঙ্গ নারীর যুগ এখন। নারীরা সতীত, হিজাফ ও চরিত্রহীনতা পরাস্ত হয়ে যাবে। এগুলো বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে। বাংলাদেশের বেশিরভাগ হাসপাতালে অহেতুক সিজার করা হয়।
নিষিদ্ধ কাজ কঠিনভাবে বলা না হলে তা কাজে দেয় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিষিদ্ধ কাজ কঠিনভাবে বলা না হলে তা কাজে দেয় না। যেসব পুরুষ নারীদের অশ্লীল কাজকে সাপোর্ট করে তারা জাহান্নামে যাবে।
ওই মুফতি বলেন, আমরা কথার ভাষাগুলো হয়তো কঠিন ছিল। আমরা যদি অহেতুক সিজার করি তা ঠিক নয়। আমি কারো মনে আঘাত দেয়ার জন্য কথাগুলো বলিনি। কেউ যদি আমার কথায় কষ্ট পান তবে আমি ক্ষমা প্রার্থী।
প্রসূতি মায়েদের সিজার ও চিকিৎসকদের নিয়ে করা সেই বেফাঁস ও অসম্মানজনক মন্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় যুগান্তর অনলাইনে। এই প্রতিবেদনের পরে ক্ষমা চেয়েছেন মুফতি কাজী ইব্রাহীম।
ভিডিওটি নিজের ফেসবুক পেজ থেকেই শেয়ার করেছেন নরসিংদী জামেয়া কাসেমিয়ার সিনিয়র শিক্ষক মুফতি কাজী ইব্রাহীম। ভিডিওটি দেখে মনে হয়েছে, একজন মানুষ শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হলে আর তাকে যদি মানুষ চেয়ারে বসায় তবে সে মানুষের জন্য কতটা ভয়াবহ ও ক্ষতিকর হতে পারে। তার কথায় খুব ভালো ভাবেই বোঝা যাচ্ছে তিনি ধর্মান্ধ।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একটি ওয়াজ মাহফিলে কথা বলছেন তিনি।
তিনি বলছেন, মানুষের বাচ্চা হইলে সিজার লাগে, ট্যাবলেট লাগে, আলট্রোসোগ্রাম লাগে।তিনটার বাচ্চা সিজার করার পর আবারো সিজার লাগে।কিন্তু কুকুরের তো একসঙ্গে ৭টা বাচ্চা হয় সিজার লাগে না। একটা ট্যাবলেটও খায় না জীবনে।
ফেসবুকে তার ভাইরাল হওয়া ওই বক্তব্যে চিকিৎসকসহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। তারই প্রেক্ষিতে তিনি ক্ষমা চান।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন