কবির হোসেন এক সাহসী, স্বপ্নবাজ, অদম্য তরুণের নাম। রাতে রিকশা চালক আর দিনে স্কুলে ক্লাস করেন নিয়মিত। স্বপ্ন দেখেন বড় ইঞ্জিনিয়ার হবেন। আর স্বপ্নকে বাস্তবে রুপ দিতে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন রংপুর মহানগরীর বাবুপাড়ার এই তরুণ।
কবির নগরীর রবার্টসনগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র।
সড়ক দুর্ঘটনায় ২০০১ সালে বাবার মৃত্যুর পর মা খোরেছা বেগমের অন্য জায়গায় বিয়ে হয়। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সবার বড় সে। বাধ্য হয়ে সংসারের হাল ধরতে হয় তাকেই। আর তাই একদিন রিকশা নিয়ে বেড়িয়ে পরেন।
রিকশা চালিয়ে যা আয় হয় তা দিয়ে চলে সংসার। সংসারের হাল ধরলেও পড়ালেখা বন্ধ রাখেননি তিনি।
শনিবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে নগরীর নিসবেতগঞ্জের ঘাঘটের সেনাপার্ক মোড়ে কবিরের সাথে কথা হয়।
কবির জানায়, নগরীর কুঠির পাড়ার ইউসেফ স্কুল থেকে অষ্টম শ্রেণী পাশ করে রবার্টসনগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছে সে। স্বপ্ন ছিলো মা-বাবা, ভাই-বোনকে নিয়ে সুখের একটি সংসার হবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর পূরণ হয়নি। বাবার মৃত্যুর পর মা বিয়ে করে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। নানিকে নিয়ে অভাব অনাটনের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কিন্তু হাল ছাড়বো না।
কবির বলেন, লেখাপড়া করে ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই। কিন্তু এই ইচ্ছা আমার পূরণ হবে কিনা জানিনা। রিকশা চালানো অর্থ দিয়ে ছোট বোন রহিমা বেগমের বিয়ে দিয়েছি।
কবিরের সহপাঠি স্টেশন বাবুপাড়া এলাকার সুজন জানায়, কবির স্কুলের মনোযগি ছাত্র। কবির মধ্যরাত পর্যন্ত রিকসা চালায়েও পড়াশোনায় ভালো করছে।
কবিরের নানি শ্রোতন নেছা জানান, অনেক কষ্ট করে নাতি-নাতনিদের নিয়ে স্টেশন এলাকায় সরকারি জায়গায় বসবাস করছি। কখনো কোনও সহযোগিতা পাইনি। কাবির রিকশা চালিয়ে যে টাকা উপার্জন কোরে তা দিয়েই পেট চালিয়ে নিচ্ছি।
শ্রোতন নেছা আরও বলেন, কবির নিয়মিত স্কুলে যেতে পারে না। রাতে রিকশা চালানোর পাশাপাশি নিয়মিত না হলেও স্কুলে যায় সে। সরকারিভাবে আমার নাতি কবিরকে সহযোগিতা করা হলে কবির তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন