ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে প্রভাতী শাখার অরিত্রীর শ্রেণি শিক্ষিকা হাসনাহেনাকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার খন্দকার নুরুন্নবী পরিবর্তন ডটকমকে জানান, রাজধানীর উত্তরা থেকে বুধবার রাত ১১টার দিকে ওই শিক্ষিকাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ডিবি সূত্রে জানা গেছে, অরিত্রীর আত্মহত্যার প্ররোচনাকারী হিসেবে অভিযোগ ‘প্রমাণিত’ হওয়ায় শিক্ষিকা হাসনাহেনা ছাড়াও ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস ও প্রভাতী শাখার শিফট ইনচার্জ জিনাত আখতারের গ্রেফতার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বুধবার মামলাটির তদন্তভার পাওয়ার পরপরই স্কুলে গিয়ে সেদিনের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে ডিবি পুলিশ। শিক্ষক ও অরিত্রীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন তারা। এরপর থেকেই অভিযুক্তদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
বিকেলে শিক্ষামন্ত্রণালয় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারকে চিঠি পাঠায়।
ওই চিঠিতে বলা হয়, অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যার বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস, শাখা প্রধান জিনাত আখতার এবং শ্রেণি শিক্ষিকা হাসনা হেনার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হল।
এদিকে এই তিন শিক্ষককে বরখাস্ত করাসহ তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া এই তিন শিক্ষকের বেতনভাতা বন্ধের ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককেও চিঠি দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।
অরিত্রীর বাবা দিলীপ অধিকারী অভিযোগ করে বলেন, অরিত্রী ক্লাস পরীক্ষায় মোবাইলে উত্তরপত্র লিখে নিয়ে গিয়েছিল বলে জানিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাকে পরীক্ষায় অংশ নিতে না দিয়ে স্কুল থেকে সোমবার আমাকে ডেকে পাঠানো হয়। আমি স্কুলের প্রিন্সিপালের রুমে দুঃখ প্রকাশ করতে গেলে তারা অরিত্রীকে টিসি দিয়ে দেবে বলে জানান এবং আমাকে অনেক কথা শোনান।
তিনি বলেন, এ সময় আমি মেয়ের সামনেই কেঁদে ফেলি। অরিত্রী হয়তো আমার ওই কান্না-অপমান মেনে নিতে পারেনি। বাসায় ফিরে সে তার ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয় এবং ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করে। বাহির থেকে অনেক ডাকাডাকি করেও দরজা না খোলায়, দরজা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করি। পরে হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক আমার মেয়েকে মৃত ঘোষণা করেন।
অরিত্রীর আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর পল্টন থানায় মামলা হয়।
পল্টন থানার উপ-পরিদর্শক এসআই সুজন তালুকদার পরিবর্তন ডটকমকে জানান, রাত ৮টার দিকে অরিত্রীর বাবা দিলীপ অধিকারী বাদী হয়ে মামলাটি (মামলা নম্বর ১০) করেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন