একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জোর প্রস্তুতি চলছে নির্বাচন কমিশনে (ইসি)। নির্বাচনের প্রস্তুতি থেকে শুরু করে ফল প্রকাশ পর্যন্ত ৯৯টি কর্মপরিকল্পনা ধরে এগোচ্ছে ইসি। ইতোমধ্যে তফসিল ঘোষণাপূর্ব কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে ইসি সচিবালয়। নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে আজ বসছে বৈঠক। এতে থাকবেন ৫ কমিশনার। আজকের কমিশনসভায় সংসদ নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি ইসিকে অবহিত করবে কমিশন সচিবালয়।
একই সঙ্গে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। সভায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার ও প্রদর্শনী বিষয়েও আলোচনা হবে। একই সঙ্গে জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা ২০০৮-এর সংশোধন নিয়ে আলোচনা করবে ইসি। সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আগামী ৩০ অক্টোবর থেকে ২৮ জানুয়ারির মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। নভেম্বরের প্রধমার্ধে তফসিল ও ডিসেম্বরের শেষভাগে ভোটগ্রহণের পরিকল্পনা করছে ইসি।
ইসি সূত্র জানায়, আজ সোমবারের কমিশনসভায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে গৃহীত সব কার্যক্রম তুলে ধরবেন ইসি সচিব। সভায় তফসিল ঘোষণাপরবর্তী করণীয় নির্ধারণে কমিশন ইসি সচিবালয়কে নির্দেশনা দেবে। ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সম্প্রতি জানিয়েছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ৮০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি কাজও সময়মতো হয়ে যাবে।
সূত্র জানায়, আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে মনোনয়ন ফরমসহ বাছাইসংক্রান্ত প্রাথমিক নির্বাচনী ফরম ও প্যাকেট মুদ্রণের কাজ সম্পন্ন করে মাঠপর্যায়ে পাঠানো হবে। অন্যান্য ফরম ও প্যাকেট মুদ্রণের কাজ নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে শেষ করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া ভোটকেন্দ্রের জন্য প্রতিষ্ঠান বাছাই সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনী এলাকাভিত্তিক ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা, ভোটকক্ষের সংখ্যা এবং ভোটার সংখ্যার তথ্যসংবলিত বিবরণী প্রস্তুতের কাজ চলছে। এ ছাড়া ভোটকেন্দ্রে ব্যবহৃত ১০ ধরনের নির্বাচনী সামগ্রীর মধ্যে স্ট্যাম্প প্যাড, ব্যালট বাক্সের লক ইত্যাদি বাদে বাকিগুলো পাওয়া গেছে। ৩০ অক্টোবরের মধ্যে বাকিগুলোও মিলবে।
এদিকে নির্বাচনী ফল ইন্টারনেটের মাধ্যমে রেজাল্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (আরএমএস) পদ্ধতিতে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পাঠানোর সফটওয়্যার প্রস্তুত করা হচ্ছে। দ্রুত ফল সংগ্রহের জন্য এ পদ্ধতি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এ ছাড়া নির্বাচনী এলাকা অনুসারে ৩০০ আসনের জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সিস্টেম (জিআইএস) প্রস্তুত করা হচ্ছে। ২০ অক্টোবরের মধ্যে এটা সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছে ইসি সচিবালয়। এর মাধ্যমে দ্রুত পৃথকভাবে প্রতিটি কেন্দ্রের ভোটার ও তার ফল জানা যাবে।
এদিকে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণের বিধান যুক্ত করে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এখনো তা পাস না হলেও ইভিএমে ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে ইসি। আগামী ২৫ অক্টোবর ইভিএম প্রস্তুতকরণ ও ব্যবহার উপযোগীকরণ যাচাই করা হবে। ৩০ অক্টোবর আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ে ইভিএমে মকভোটিং ও প্রদর্শন করা হবে।
আঞ্চলিক-জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসছে ইসি : এদিকে একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আগামী ১৬ অক্টোবর সব আঞ্চলিক ও ৬৪ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে বসছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ সংক্রান্ত সভায় ভোটার তালিকা, ভোটকেন্দ্রসহ বিভিন্ন বিষয়ে কর্মকর্তাদের দিকনির্দেশনা দেবে কমিশন।
সভায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ভোটার তালিকার সিডি যাচাই ও মুদ্রণ, ভোটকেন্দ্র স্থাপনের জন্য প্রতিষ্ঠান নির্ধারণ এবং ক্ষেত্র অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের বিশেষ সংস্কার বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেওয়া হবে। পাশাপাশি ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল প্রস্তুত এবং প্রশিক্ষণের আয়োজনসহ নির্বাচনী সরঞ্জাম সংগ্রহ ও বিতরণ বিষয়ে আলোচনা করা হবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন