তিন মাস আগে ঢাকার গুলশান এলাকায় রানা শেখ নামে এক যুবক তার এসএসসি সার্টিফিকেট ও জন্মসনদসহ কিছু গুরুত্বপূর্ন কাগজের ফটোকপি হারিয়ে ফেলেন। ফটোকপি হওয়ার কারণে তিনি এ বিষয়ে তেমন গুরুত্ব দেননি।
কিন্তু তার ওই হারিয়ে যাওয়া সার্টিফিকেটসহ অন্যান্য কাগজের ফটোকপি আরেকজন যুবক পান। তিনি ওইসব কাগজপত্র ব্যবহার ঢাকার গুলশান-২ এলাকায় ‘টিইউভি রেইনল্যান্ড বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেন।
কিন্তু চাকরির এক মাসের মাথায় সেখান থেকে ল্যাপটপ চুরি করে পালিয়ে যান ওই যুবক। এদিকে ওই কোম্পানীর লোকজন চুরির সিসিটিভি ফুটেজসহ থানায় এজাহার দায়ের করেন রানা শেখের বিরুদ্ধে।
পরে প্রতিষ্ঠানের লোকজন রানার বাড়ি রাজবাড়ি সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের মজলিশপুর গ্রামে গিয়ে দেখেন তাদের প্রতিষ্ঠানের কর্মচারি রানার সঙ্গে এই রানার কোনো মিল নেই।
রানা বলেন, আমি গত নয় মাস ধরে ঢাকায় যমুনা ফিউচার পার্কে ইন্ডিয়ান ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারে (আইভেক) মেসেঞ্জার হিসেবে চাকরি করি। পরে তারা আমার কাছে দুঃখ প্রকাশ করে চলে যান।
টিইউভি রেইনল্যান্ড বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেডের অ্যাডমিন ডিপার্টমেন্টের অ্যাডমিন অ্যাসিসটেন্ট খন্দকার সাব্বির হোসেন বলেন, একমাস আগে স্মার্ট ফোর্স আউটসোর্সিং সিষ্টেম লিমিটেড নামে একটি এজেন্সির মাধ্যমে আমাদের অফিসে একজন ল্যাব অ্যাটেন্ড্যান্ট (ক্লিনার) নিয়োগ দেয়া হয়।
সে সময় নিয়োগপ্রাপ্ত ওই যুবক আমাদের কাছে রানা শেখের জন্মসনদ, এসএসসির সার্টিফিকেট, জীবন বৃত্তান্ত ও চারিত্রিক সনদ দাখিল করে।
আমরা তাকে এতোদিন রানা শেখ বলেই জানতাম। গত বৃহস্পতিবার সকালে ওই যুবক অফিস থেকে লক্ষাধিক টাকা দামের একটি ল্যাপটপ চুরি করে পালিয়ে যায়। বিষয়টি অফিসের সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে।
এরপর অফিসে দাখিল করা তার কাগজপত্র দেখে ও সিসিটিভি ফুটেজ নিয়ে রানা শেখের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় একটি এজাহার দায়ের করা হয়।
তিনি বলেন, আমার বাড়িও রাজবাড়ী হওয়াতে রানার কাছ থেকে ল্যাপটপ উদ্ধারের জন্য অফিস থেকে আমাকে দায়িত্ব দেয়া হয়। শুক্রবার বিকালে আমি এক বন্ধুকে নিয়ে রানার বাড়িতে যাই। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখি আমাদের অফিসের কর্মচারি যে রানা ল্যাপটপ চুরি করেছে এই রানা সেই রানা নয়।
এরপর আমরা বুঝতে পারি রানার কাগজপত্র দাখিল করে প্রতারণার মাধ্যমে ওই যুবক চাকরি নিয়েছিলো। পরে আমরা রানা ও তার পরিবারের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে চলে আসি। আমরা থানায় জানিয়ে দিয়েছি যাতে রানার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়া হয়।
এখন আমরা স্মার্ট ফোর্স আউটসোর্সিং সিষ্টেম লিমিটেডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। কারণ তারা কোনো ভেরিফাই না করেই একজন প্রতারককে আমাদের অফিসে কাজের জন্য দিয়েছিলো।
স্মার্ট ফোর্স আউটসোর্সিং সিষ্টেম লিমিটেডের হেড অফ অপারেশন মারুফ আহমেদ বলেন, নাম ঠিকানা ভেরিফাই না করার কারণেই এই অনাকাঙ্খিত ঘটনাটি ঘটেছে। আমরা প্রতারক যুবককে খোঁজার চেষ্টা করছি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন