‘‘মা, ওমা আব্বারে কওনা আমি এই বার নানা - নানীর লগে ঈদ করমু, আমারে নানীর বাড়িত লইয়া যাইতে কও আব্বারে। পোলার এমন কথায় ওর বাপেরে দিয়া নানী বাড়িত পাঠাইলাম। আর আমার পোলা বাড়িত ফিরলো টুকরা টুকরা লাশ হইয়া। জাদুর মুখটাও আমি দেখতে পারলাম না ভাই। কচু কাডার লাহান কইরা আমার পোলাডারে মারছে ওরা, যারা আমার পোলাডারে এমনে কইরা মারলো তাগোর ফাঁসি চাই আমি।’’
কথাগুলো বলতে বলতে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন মা রিনা বেগম। কলিজার টুকরো ছেলেকে হারিয়ে শোকের মাতম থামছেই না তাদের।
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার এনায়েতপুর ইউনিয়নের সুয়াইতপুর গ্রামের কৃষক আ. মালেকের দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে মো. রিফাত (১০) নিখোঁজের ৭ দিন পর তার অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রোববার রাতে ভালুকা উপজেলার উথুরা ইউনিয়নের বনগাও গ্রামে নানা বাড়ির এলাকার গজারী বন থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
নিহত রিফাত
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ওই রাতেই বনগাঁও গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে নাসির উদ্দিনকে (২৬) আটক করে জিঞ্জাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
এ বিষয়ে ভালুকা থানার এসআই মোকলেসুর রহমান সমকালকে বলেন, রিফাতের এমন মৃত্যু খুবই হৃদয় বিদারক। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে এজনকে আটক করা হয়েছে। তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তদন্তের পরই বিস্তারিত জানা যাবে।
নাসিরের পরিবারের সদস্যরা বলেন, নাসির উদ্দিন ভালুকার একটি বেসরকারী হাসপাতালে রোগীর দালাল হিসেবে কাজ করেন।
এর আগে গত ১০ জুন বিকেলে ভালুকার উথুরা ইউনিয়নের বনগাও গ্রামের নানার বাড়ি থেকে একটি মোবাইল নিয়ে ঘুরতে বের হয় রিফাত। পরে আর বাড়িতে ফিরে না আসায় রিফাতের সঙ্গে থাকা মোবাইলে ফোন করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় পরদিন রিফাতের নানী মোছা. রেনু ভালুকা থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন (জিডি নং- ৪৯৯) ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন