জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করেছেন নন-এমপিও শিক্ষকরা। চলতি মাসের ১০ তারিখ থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন তারা। সোমবার সকাল থেকে প্রেসক্লাবের উল্টো দিকের রাস্তায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষকরা।
গতকাল (রোববার) শিক্ষকদের এক কর্মসূচি থেকে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পুলিশের অনুমতি না থাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের ফুটপাতে অবস্থান নিতে পারছেন না শিক্ষকরা। তবে যে স্থানে এখন কর্মসূচি পালন করছেন, সেখানেরও কোনো অনুমতি নেই বলে জানিয়েছেন শাহাবাগ থাকার পেট্রোল ইন্সপেক্টর (পিআই) শেখ আবুল বাশার।
তিনি বলেন, ডিএমপি থেকে তাদের কোনো শিক্ষকরা কোনো অনুমতি নেননি। আমরা যে কোনো সময় তাদের তুলে দিতে পারি।
অনুমতির বিষয়ে নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী (ডলার) বলেন, এ নিয়ে ২৭ বার আন্দোলন করছি আমরা। প্রতিবার অনুমতির জন্য আবেদন করতাম। তাতেই অনুমতি হয়ে গেছে। এবারও আমরা আবেদন করেছি। তবে পুলিশ সব সময় আইনের ফাঁক রেখে দেয়।
তিনি বলেন, এতো দিন মাইক ব্যবহারের অনুমতি ছিলো না। এখন পেয়েছি। এ জন্য অবস্থান কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালনের জন্য শিক্ষামন্ত্রী নরুল ইসলাম নাহিদকে দোষারোপ করছেন তারা।
এ বিষয়ে সংগঠনের খুলনা জেলার সহ-সভাপতি শুভঙ্কর মজুমদার পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আন্দোলন করার সময় শিক্ষামন্ত্রী আমাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন। এমন আশ্বাস বিগত দিনেও তিনি দিয়েছেন। তাই তাকে আর বিশ্বাস করতে পারছি না। এ জন্য তার কথায় আন্দোলন থামানো হয়নি। এর পর ৫ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে আমরা অবস্থান কর্মসূচি থেকে সরে যাই।
তিনি বলেন, ‘এরপর শিক্ষামন্ত্রী আমাদের বলেছেন, আমার কথায় না সরে প্রধানমন্ত্রীর পাঠানো এক কর্মচারীর কথায় রাস্তা ছেড়েছেন। আমিও দেখে নিবো কিভাবে আপনারা এমপিও পান।’
এ কারণে নন-এমপিও প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরো চেপে ধরেছেন মন্ত্রী। এমপিও পাওয়ার জন্য চলতি মাসের ১২ তারিখ আরো কিছু নীতিমালা সংযোজন করা হয়। যা অন্যায়ভাবে করা হচ্ছে বলে জানান শিক্ষকরা।
এমপিও আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকার হুঁশিয়ারি দেয়ার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা প্রত্যাশা করছেন তারা। শিক্ষকদের দেয়া তথ্যমতে, এখনো ৫ হাজার ২৪২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিও পায়নি।
শিক্ষকরা বলছেন, কত বছর বিনা বেতনে শিক্ষা দান করবো। আর মানবেতর জীবন-যাপন করতে পারছি না। এ জন্য ঈদের সময় আমরা রাস্তায় নেমেছি।
উল্লেখ, ঈদুল ফিতরের নামাজ শেষ করে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ভুখা মিছিল করেন নন-এমপিও শিক্ষকরা। শনিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে প্রেসক্লাবের উল্টো দিক থেকে মিছিল নিয়ে পল্টন মোড় হয়ে প্রেসক্লাবের সামনে এসে শেষ হয় মিছিলটি।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রেসক্লাবের উল্টো দিকে রাস্তায় ঈদের নামাজ আদায় করেন তারা। চলতি মাসের ১০ তারিখ থেকে বিক্ষিপ্তভাবে প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষকরা।
২৭ বারের মতো এই আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন তারা। ১৪টি ধাপ পার করে একাডেমিক স্বীকৃতি পাওয়ার পরও এমপিও না পাওয়ায় আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন