যুক্তরাজ্যের রয়েল কলেজ অব জেনারেল প্র্যাকটিশনার্স (আরসিজিপি) নতুন এক প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া এ প্রদর্শনীতে দেশটিতে সেবাদানকারী বাংলাদেশি চিকিৎসকদের প্রতি সম্মান জানানো হয়। বছরের পর বছর ধরে যুক্তরাজ্যের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ফ্যামিলি ডক্টরের শূন্যস্থান পূরণে ভূমিকা রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ তাদের এ সম্মান জানানো হয়।বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া ওই প্রদর্শনীর নাম দেওয়া হয়েছে ‘মাইগ্র্যান্টস হু মেড দ্য এনএইচএস’।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো থেকে এসে যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রীয় তহবিলে পরিচালিত ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (এনএইচএস)-এর স্বাস্থ্য সেবায় অবদান রাখা হাজারো চিকিৎসকের কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। ১৯৪০ থেকে ১৯৮০ সালের মাঝামাঝি সময়ে আরসিজিপি’র মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের বেশিরভাগ প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্বাস্থ্য সেবা দেন দক্ষিণ এশীয় চিকিৎসকরা।
রয়েল কলেজ অব জেনারেল প্র্যাকটিশনার্স-এর অধ্যাপক ময়ূর লাখানি বলেন, আজকের দিন যুক্তরাজ্যের সাধারণ প্র্যাকটিসের বিষয়টি একটি কঠিন কাজ ছাড়া আর কিছুই নয়। এর সঙ্গে উদ্ভাবন, আমাদের পূর্বসূরীদের সাহস এবং রোগীর ভালোভাবে পরিচর্যার মতো বিষয়গুলোও রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে তাদের ছাড়া যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস সামগ্রিকভাবে টিকে থাকতে পারতো না।
তিনি বলেন, শুধু সাধারণ চিকিৎসক হিসেবেই নয়, বরং নিজেদের পেশাগত প্র্যাকটিসের জায়গায়, সেখানকার মানুষের কাছে তারা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছেন। অনেকে অবিশ্বাস্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলেও আমাদের প্রদর্শনীতে ইতিবাচক বিষয়গুলোই তুলে ধরা হয়েছে। রোগীদের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের বিষয়টি সামনে নিয়ে আসা হয়েছে।এনএইচএস-এর ৭০ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে লন্ডনের কেন্দ্রস্থলে রয়েল কলেজ অব জেনারেল প্র্যাকটিশনাসের দফতরে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। এমন সময়ে এর আয়োজন করা হলো যখন ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠানের কর্মী এবং তহবিল গঠনের প্রয়োজনীতার মতো বিষয়গুলো নিয়ে বিতর্ক বাড়ছে।
ডক্টর জুলিয়ান এম সিম্পসন লেখা একটি আলোচিত বইয়ের নাম ‘মাইগ্রেন্ট আর্কিটেক্টস অব দ্য এনএইচএস: সাউথ এশিয়ান ডক্টরস অ্যান্ড দ্য রিইনভেনশন অব ব্রিটিশ জেনারেল প্র্যাকটিস (১৯৪০-১৯৮০)’। এই বইটির ওপর ভিত্তি করে প্রদর্শনীতে কিছু বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সংরক্ষণাগার গবেষণা ও ছবির মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এছাড়া ৪০ জন সাধারণ চিকিৎসকের মৌখিক সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে যারা ওই সময়ে দক্ষিণ এশিয়া থেকে যুক্তরাজ্যে পাড়ি দেন। এ সময়ের মধ্যে দেশটিতে পাড়ি জমানো চিকিৎসকের মধ্যে কেউ কেউ এখনও প্র্যাকটিস করে যাচ্ছেন।
জুলিয়ান এম সিম্পসন বলেন, এ বিষয়টি মনে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, যুক্তরাজ্যজুড়ে যাদের স্বাস্থ্য সেবা নেওয়ার মতো সক্ষমতা নেই, সেসব মানুষকে এ সেবা দিতেই ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে আসা অনেক সাধারণ চিকিৎসক মানুষকে এ সেবা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে আসা সাধারণ চিকিৎসকরা শুধু ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসেই অবদান রাখছেন না, তার বেশ জীবনবোধ সম্পন্ন। আমাদের স্বীকার করতে হবে যে, এনএইচএস-এর স্থপতিদের মধ্যে তারাও ছিলেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন