‘আগে যা বলেছি, তা সঠিক ছিল না। আজ যা বলছি তাই সঠিক। নিতান্ত লোভের বসেই আমার ওপর ভিসি নির্যাতন চালিয়েছেন এ কথা বলেছিলাম। আমরা অত্যন্ত গরিব। ২০১৬ সালে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক আমাকে বিয়ে দেন। আমি দুস্থ পুনর্বাসন কেন্দ্রে মানুষ হয়েছি। আসলে আমাকে এবং আমার স্বামীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দেবার কথা থাকলেও ভিসি শেষ পর্যন্ত চাকরি দেননি ‘
‘তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসির বিপক্ষের যে অংশ রয়েছে তাদের প্রলোভনে পড়ে ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের কারণে এবং আমরা ক্ষুব্ধ হয়ে ভিসি স্যারের বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা বলেছি। সাংবাদিকদের কাছে মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করেছিলাম। যে কারণে মিডিয়ায় আমাদের দেয়া মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে সংবাদ প্রচার হয়েছে।’
এভাবেই গোপালগঞ্জ প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার রোলে কর্মরত আফ্রিদা আক্তার ঝিলিক। নিজের স্বামী নাফিউল আসাদ এবং একমাত্র সন্তানকে কোলে নিয়ে গোপালগঞ্জ প্রেসক্লাবে আসেন তিনি। সেখানে তারা তাদের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চান এবং গত রবিবার নিতান্ত চাকরি না হওয়ার কারণেই তারা ভিসির বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করেছিলেন বলে জানান।
তারা স্বামী-স্ত্রী দুজনে মিলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. নাসির উদ্দিনকে ভালো মানুষ উল্লেখ করে বলেন, লোভের বসেই তারা সাংবাদিকদেরকে মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করেছেন, কিন্তু মিথ্যা বেশিদিন টেকে না। তাই তারা উপলব্ধি করতে পেরে আজ মঙ্গলবার সঠিক তথ্য তুলে ধরছেন বলে উল্লেখ করেন।
ভিসির বিরুদ্ধে তারা যেসব মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন তা প্রত্যাহার করে নিতে চান। আর মিথ্যা তথ্য সরবরাহের জন্য তরা সবার কাছে ক্ষমা চান।
গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার রোলে কর্মরত আফ্রিদা আক্তার ঝিলিক গত রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে ভিসির বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনসহ নানা অভিযোগ করেন। সেসব অভিযোগের অডিও এখন মানুষের মোবাইলে মোবাইলে ঘুরে ফিরছে। বিষয়টি টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়েছে।
এসব অভিযোগের ডালপালা অনেক দূর ছড়ায়। কোনটা সত্য আর কোনটা মিথ্যা তা বোঝাটাই দায়। এমন অভিযোগ এবারই প্রথম নয়। এর আগেও নারী কেলেঙ্কারি ও আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠে ভিসির বিরুদ্ধে।
প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে বর্তমান ভিসি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আছেন। ইতোপূর্বে তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ ওঠে তা প্রমাণ হয়েছে কি না এর কোনো প্রমাণ নেই। এসব বিষয়ে কোনো তদন্ত কমিটি হয়েছে কি না বা তদন্ত হলে এর ফলাফলই বা কী তা কখনোই জনসম্মুখে আসেনি।
ভিসির বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ বিষয়ে তিনি মোবাইল ফোনে ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘মেয়েটিকে আমি মেয়ের মতো দেখি। সে অসহায় একটি মেয়ে। তাকে এবং তার স্বামীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দিতে আমি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলাম। কিন্তু, এবারের ধাপে তাদের চাকরি দিতে পারিনি নানা কারণে। আর এজন্য ক্ষুব্ধ হয়ে অন্যের প্ররোচনায় পড়ে তারা আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ এনেছে।’
(ঢাকাটাইমস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন