গত বছরের ২ আগস্ট, বিকেল সোয়া চারটা। মাত্র আধাঘণ্টার বৃষ্টি। ডুবেছিল রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা। কাকরাইলে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের মাঠে ছিল প্রায় দুই ফুট পানি। প্রথম শ্রেণির ছাত্র রণবীর মায়ের সঙ্গে গোপীবাগের বাসায় ফিরবে। রিকশা নেই, দু’একটি থাকলেও যাবে না। বাধ্য হয়েই ময়লা পানিতে দাঁড়িয়ে ছিল রণবীর। অনেক কষ্টে উঠল ‘রংধনু’ বাসে, সঙ্গে মাও। দাঁড়ানোর মতো জায়গাও ছিল না। জলজট আর যানজটে একাকার ছিল ঢাকা শহর। বাস চলছে না। অনেক কসরত করে রংধনু যখন ইত্তেফাকের মোড়ে পৌঁছাল, ঘড়িতে তখন রাত ৮টা বাজতে ১০ মিনিট বাকি। ১০ মিনিটের রাস্তা প্রায় তিন ঘণ্টা লাগল। রণবীরের মা বললেন, এ রকম দুর্ভোগ কারো যেন না হয়। রাজধানীর পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার এই হাল তাকে ক্ষুব্ধ করেছে। তখন তার প্রশ্ন ছিল, রাজধানীবাসীর এ জনভোগান্তি দেখার কি কেউ নেই? এসব গল্প নয়, বাস্তবতা। বন্যা নয়, বৃষ্টি হলেই ঢাকার স্কুলের শিশুশিক্ষার্থী আর অভিভাবকরা দুশ্চিন্তায় পড়ে যান।
এভাবেই গত বছর বর্ষায় সামান্য বৃষ্টিতে প্রায় প্রতিদিন রাজধানীর কোনো না কোনো এলাকায় অস্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছিল। তখন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেছিলেন, আগামী বর্ষায় আর জলাবদ্ধতা থাকবে না। সেই বর্ষার আর দেড় মাসের মতো বাকি। কিন্তু জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তির কোনো কার্যক্রমই শুরু করা হয়নি এখনো। জলাবদ্ধতা নিরসনের মূল দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান ঢাকা ওয়াসা এখন পর্যন্ত কোনো নালা পুরোপুরি পরিষ্কার করেনি, পুনঃখনন করেনি কোনো খাল।
কখনো গুঁড়িগুঁড়ি, কখনো ভারি আবার কখনো ঝুম বৃষ্টি। গ্রীষ্মের শুরুতেই কালবৈশাখী ঝড় আর বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। তার ওপর বছরজুড়ে চলা খোঁড়াখুঁড়িতে এই দুর্ভোগ বেড়ে যায় কয়েকগুণ। প্রতিবছরের মতো এবারো বর্ষায় জলাবদ্ধতা নিয়ে দুশ্চিন্তায় নগরবাসী। তবে বরাবরের মতোই এবারো আশ্বাস মিলেছে দায়িত্বশীলদের কাছ থেকে।
নগর গবেষণা কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বললেন, গতবারের জলাবদ্ধতার পর তা নিরসনের লক্ষ্যে এবার যেমন ব্যাপক ও সর্বাত্মক কাজ হওয়া উচিত ছিল তুলনামূলকভাবে সেটা কিন্তু দেখা যাচ্ছে না। এখন দোয়া করতে হবে এবার যেন গত বছরের মতো এক সঙ্গে বেশি বৃষ্টি না হয়।
মৌসুমের শুরুতেই চলতি বছরেও বর্ষা এলেই চিরচেনা ঢাকা রূপ নেয় এক ভিন্ন নগরীতে। সামান্য বৃষ্টিতেই পানি
জমে যায় প্রধান সড়ক থেকে অলিগলির ভেতরে। আর অপরিকল্পিত খোঁড়াখুঁড়ি এই দুর্ভোগ বাড়িয়ে দেয় কয়েকগুণ। যানজটের শহর ঢাকা বলা যায়, পরিণত হয় প্রায় অচল এক নগরীতে। গুলিস্তান, শান্তিনগর, নিউমার্কেট, কারওয়ানবাজার, মিরপুর, খিলক্ষেত, বাড্ডাসহ সব এলাকার একই অবস্থা। নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, এখনো সেবা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় না থাকায়, বছরজুড়ে এলোমেলো কাজ হলেও তা আসলে কোনো কাজে আসছে না।
স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো, সামাজিক সংগঠনগুলোকে নিয়ে সরকারের বিরাট উদ্যোগ নেয়ার কথা ছিল। কোনো কিছু না করে জলজট কমানোর প্রত্যাশা করা বোকামি ছাড়া কিছু না।
বছরের পর বছর কথা হলেও বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার জলাবদ্ধতা সমস্যার সুরাহা খুব একটা হচ্ছে না। একটু ভারি বৃষ্টি হলেই পানির নিচে চলে যায় সব। বিশ্লেষকরা বলছেন, ঢাকার পানি সরে যাওয়ার কোনো পথই খোলা নেই। তাহলে জলাবদ্ধতা হবে না কেন?
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওয়াসার এক কর্মকর্তা বলেছেন, এবারে রাজধানীবাসীর প্রকৃতিই ভরসা। বৃষ্টি কম হলে রক্ষা আর বেশি হলে জলাবদ্ধতা ভয়াবহ রূপ পাবে। তখন ডুবন্ত ঢাকার দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া কিছুই করার থাকবে না।
যদিও গতবার জলাবদ্ধতার ভয়াবহতা দেখে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছিলেন, ‘আমি প্রমিজ করছি, সামনের বছর থেকে আর এসব (জলাবদ্ধতা) দেখবেন না। কিছুদিনের মধ্যেই নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হবে।’
জানা গেছে, রাজধানীর এই জলাবদ্ধতা নিরসনের দায়িত্ব নিয়ে ওয়াসা এবং সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে আছে রশি টানাটানি। ১৯৮৯ সালে ওয়াসাকে পানি নিষ্কাশনের মূল দায়িত্ব দেয়া হয়। পাশাপাশি এ কাজে যুক্ত হয় ঢাকা সিটি কর্পোরেশনসহ আরো কয়েকটি সংস্থা। ওয়াসা ২০১৪ সালের আগস্টে স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠানো এক চিঠিতে জানায়, জলাবদ্ধতার দায় ওয়াসা নেবে না। কারণ, ‘পানি নিষ্কাশনের কাজ ঢাকা ওয়াসার ওপর ন্যস্ত করা হলেও ওয়াসার চেয়ে সিটি কর্পোরেশনের পাইপলাইনের সংখ্যা বেশি। বার্ষিক ক্লিনিংয়ের ব্যাপারেও দুটি সংস্থার মধ্যে সমন্বয় নেই। এজন্য সামান্য বৃষ্টিতেই জলজট দেখা দেয়।’
এদিকে পরবর্তিতে আবার গণপূর্ত এবং পানিসম্পদমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে নিয়ে ২০১৭ সালের জুলাইয়ে রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনে আলোচনায় বসেন প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক। মন্ত্রণালয়ের পরামর্শে দায়িত্ব নিতে আগেই খাল পরিচ্ছন্ন ও দখলমুক্তের শর্ত দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই শর্ত অনুযায়ী জলাবদ্ধতা নিরসনে রাজধানীর খাল পরিচ্ছন্ন ও দখলমুক্ত করে ৯ মাসেও সিটি কর্পোরেশনে হস্তান্তরের কাজ করতে পারেনি ওয়াসা। তাছাড়া বর্ষা ঘনিয়ে এলেও ওয়াসার ২৬ খাল পরিচ্ছন্নের কার্যকর পদক্ষেপ চোখে পড়েনি রাজধানীতে। দু’একটি জায়গায় উচ্ছেদের পর আবার হয়েছে দখল।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র আলহাজ মো. ওসমান গনি বলেন, শর্ত-অনুযায়ী ওয়াসা কাজ শেষ না করায় দেখভালের দায়িত্ব নিতে পারছেন না তারা।
তবে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান বলেন, খাল পরিচ্ছন্ন ও দখলমুক্ত করে সিটি কর্পোরেশনকে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
ওয়াসার তথ্য অনুযায়ী, সংস্থাটির আওতায় ৩৬০ কিলোমিটার পানি নিষ্কাশন নালা, ১০ কিলোমিটার বক্স কালভার্ট ও মোট ৭৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে ২৬টি খাল রয়েছে। এগুলো নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নমূলক কাজের জন্য দুটি সার্কেল ও একটি বিভাগ রয়েছে। এগুলো হচ্ছে ড্রেনেজ (পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ) সার্কেল, ড্রেনেজ গবেষণা ও উন্নয়ন সার্কেল এবং পরিকল্পনা ও উন্নয়ন (ড্রেনেজ) বিভাগ। ওয়াসার ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ড্রেনেজ (পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ) সার্কেলে ৮৭ জন, ড্রেনেজ গবেষণা ও উন্নয়ন সার্কেলে ৩৪ জন এবং পরিকল্পনা ও উন্নয়ন (ড্রেনেজ) বিভাগে ১২ জন কর্মরত আছেন।
বাংলাদেশ প্ল্যানার্স ইনস্টিটিউটের সভাপতি অধ্যাপক গোলাম রহমান বলেছেন, আশির দশকে নগর বন্যার পর ফ্লাড অ্যাকশন প্রোগ্রাম (ফ্যাপ)-এর আওতায় ঢাকার চারপাশ ঘিরে একাংশে শহর রক্ষা বাঁধ তৈরি হয়। কিন্তু পুরো কাজ আর হয়নি। কথা ছিল ওটা হলে সার্কুলার রোড, ড্রেন এসব তৈরি হবে। কিন্তু হয়নি। আর ঢাকার চারপাশে নদী। থাইল্যান্ডে শহরের ভেতরে ওয়াটার বোট চলে। আমাদেরও সুযোগ ছিল। কিন্তু আমরা নষ্ট করে ফেলেছি। শহরের নদী-খাল ভরাট করে আমরা রাস্তা বানিয়েছি। ফলে এখন জলাবদ্ধতা স্থায়ী রূপ নিয়েছে।
তিনি বলেন, ঢাকা শহরের মধ্যে ৪৬টি খাল ছিল। ওয়াসা বলেছিল, এর মধ্যে কমপক্ষে ২৬টি খালকে রক্ষণাবেক্ষণ করে পানিপ্রবাহ সচল রাখবে। কিন্তু বাস্তবে তো তা আর হচ্ছে না।
তিনি আরো বলেন, প্রাকৃতিকভাবেই পানি নিষ্কাশনের পথগুলো খুলে দেয়া হলো সহজ পথ। আর তা না হলে বিছিন্নভাবে নয়, ন্যাশনাল অ্যাকশন প্ল্যানের মাধ্যমেই এর সমাধান করতে হবে। সারাদেশকে নিয়ে পরিকল্পনা করতে হবে। শুধু ঢাকা নিয়ে পরিকল্পনা করলে তা তেমন ফল আনবে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কাজ না থাকায় অলস সময় কাটাচ্ছেন ওয়াসার ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা ১৩৩ কর্মকর্তা-কর্মচারী। ওয়াসা কর্তৃপক্ষ বলছে, অর্থ বরাদ্দ না থাকায় তারা কোনো কাজ করতে পারছে না।
প্রতিবছর এপ্রিল-মে মাস থেকে শুরু হয় বর্ষা। আর ওয়াসার নালা ও খাল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নের (রক্ষণাবেক্ষণ) কাজ শুরু হয় জানুয়ারি থেকে। রক্ষণাবেক্ষণে যে ব্যয় হয়, তার একটি অংশ আসে ওয়াসার নিজস্ব বাজেট থেকে, বাকি অংশ দেয় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, গত বর্ষার আগে রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ ওয়াসার বরাদ্দ ছিল ১১ কোটি টাকা ও মন্ত্রণালয় দিয়েছিল সাড়ে ৫ কোটি টাকা। গত বছর বর্ষায় ব্যাপক জনভোগান্তির পরও এই খাতে এবারে এক টাকাও বরাদ্দ বাড়েনি। ওয়াসা লাভজনক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও গত বছরের সমান বরাদ্দই রেখেছে এ খাতে। তারা মন্ত্রণালয়ের কাছে বাড়তি টাকা চেয়েছে।
যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কত টাকা প্রয়োজন, জানতে চাইলে ওয়াসার নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলছেন, এজন্য ৬০-৭০ কোটি টাকা প্রয়োজন। এজন্য চলতি বছর মন্ত্রণালয়ের কাছে ৬০ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। গত বছর চাওয়া হয়েছিল ৪০ কোটি টাকা। কিন্তু তারা সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা করে দিয়ে যাচ্ছে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, অতিরিক্ত বরাদ্দ চেয়ে ওয়াসা স্থানীয় সরকার বিভাগকে একাধিক চিঠি দিয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালে ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ না পাওয়ায় ওয়াসা খাল খনন, বক্স কালভার্ট ও পাইপলাইন যথাযথভাবে পরিষ্কার করতে পারেনি। ফলে গত বর্ষায় সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। একই চিঠিতে এবার ৬০ কোটি টাকা চাওয়ার কথা জানিয়ে বলা হয়েছে, এই টাকা না পাওয়ায় এবার খাল খনন, বক্স কালভার্ট ও পাইপলাইন পরিষ্কার করা সম্ভব হচ্ছে না। বরাদ্দ না বাড়ালে আগামী বর্ষায় ঢাকা মহানগরীর জলাবদ্ধতা ভয়াবহ আকার ধারণ করে মারাত্মক জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করবে এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি (আগামী বর্ষায় জলাবদ্ধতা হবে না) রক্ষা করা সম্ভব হবে না।
ড্রেনেজ সার্কেলে ওয়াসার নিজস্ব বরাদ্দ না বাড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তাকসিম এ খান বলেন, ‘বরাদ্দ কিছু না। ওয়াসার যখন যেমন টাকা থাকে, তখন তেমন ব্যয় করি। ড্রেনেজে আমাদের অংশের কাজকর্ম ঠিকই আছে। এ ব্যাপারে ওয়াসার প্রস্তুতি পরবর্তিতে জানানো হবে।’
নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক আকতার মাহমুদ বলেছেন, ওয়াসা মূলত পানি সরবরাহ, পয়ঃনিষ্কাশন ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার কাজ করে। এর মধ্যে ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা ভর্তুকি খাত। এখান থেকে ওয়াসার কোনো আয় নেই। তাই এ খাতে ওয়াসার মনোযোগও নেই। এই অবহেলার ফল ভোগ করতে হয় রাজধানীবাসীকে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পানি নিষ্কাশনের দুটি পথ আছে। এক. ভূ-গর্ভে পানি শোষণ করে নেয়া এবং দুই. খাল, বিল ও ড্রেন দিয়ে নদীতে চলে যাওয়া। ঢাকায় এই দুটি পথের একটিও কার্যকর নেই। এ কারণে জলাবদ্ধতা বাড়ছেই।
বিআইডব্লিউটিএর সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী এবং নগর বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহম্মেদ বলেন, পানির ধর্মকে অস্বীকার করে আমরা ঢাকা শহর থেকে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে দিয়েছি। ঢাকার মধ্যে ৪৬টি খাল ছিল, তা আমরা ভরাট করে ফেলেছি। ফলে বৃষ্টির পানি সরতে পারে না। পানি নিচের দিকে যায়। যেতে না পেরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ঢাকায় প্রাকৃতিকভাবে পানি প্রবাহের পথ রুদ্ধ করে অন্য কোনো ব্যবস্থায় এই জলাবদ্ধতা দূর করা কঠিন।
এদিকে বর্ষা মৌসুমে রাজধানীর ধানমণ্ডি, কলাবাগান, কাঁঠালবাগান, পান্থপথ ও কারওয়ানবাজার এলাকার জলাবদ্ধতা কমাতে নতুন সংযোগ পথ তৈরি করছে হাতিরঝিল প্রকল্প। রামচন্দ্রপুর খাল হয়ে পানি নিষ্কাশনের জন্য ধানমণ্ডির ২৭ নম্বর সড়ক কেটে তলদেশ দিয়ে এ পথ তৈরি করা হচ্ছে। এপ্রিলেই কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক।
ধানমণ্ডির ব্যস্ততম সড়কের নাম ২৭ নম্বর। দু’পাশে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শপিংমল আর বেসরকারি অফিস থাকায় যানজটের তীব্রতা দিন দিন বাড়ছে। গত দুই মাস ধরে এ সড়কের ১২ ফুট কেটে তলদেশ দিয়ে পানি নিষ্কাশনের জন্য ৪ মিটার প্রস্থ একটি পথ তৈরি করছে হাতিরঝিল প্রকল্প।
হাতিরঝিল প্রকল্প পরিচালক মে. জে. আবু সাঈদ মো. মাসুদ বলেন, ধানমণ্ডির ২৭ নম্বর সড়ক থেকে রাপা প্লাজার মুখ পর্যন্ত খালের একটা লিংক করলাম। এই লিংকটা আগে ছিল না। ওটা দিয়ে রামচন্দ্রপুর খাল হয়ে কল্যাণপুরে ওয়াসার খালের সঙ্গে মিলে যাবে। এটা করলে কাঁঠালবাগান প্লাবিত হবে না এবং হাতিরঝিলও থাকবে পরিপাটি। প্রকল্পের পরিচালক জানান, বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা ঠেকাতেই নতুন সংযোগ পথ তৈরি হচ্ছে।
মানবকণ্ঠ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন