বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়ে প্রাধ্যক্ষের যেমন দলীয় পদ ধারণ করে রাজনীতি করার অধিকার আছে (নৈতিকতার বিষয় বিবেচনায় না নিয়ে বলছি), রাষ্ট্রীয় আইনে নিষিদ্ধ নয় এমন যে কোনো দলের রাজনীতি করার অধিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আছে। সরকারের বা দলের সমালোচনা করে পোস্ট যে কোনো শিক্ষার্থী দিতে পারেন। ‘সরকার বিরোধী কর্মকাণ্ড’ -এই যুক্তিতে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা উপাচার্য- প্রাধ্যক্ষ- প্রক্টর, কারও নেই।
কবি সুফিয়া কামাল হলের ছাত্রলীগ নেত্রী আন্দোলনকারী একজনের ‘পায়ের রগ’ কেটে দিয়েছেন, এই গুজব বিষয়ে আসি। আসুন ধরে নিই আন্দোলনকারীরা এই ‘গুজব’ পরিকল্পিতভাবে ছড়িয়েছেন। তাহলে প্রক্টর আর ভিসি কি করেছেন? হল প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষকরা কি করেছেন?
প্রক্টর বলেছেন ‘অপরাধ সংগঠিত হয়েছে। মেয়েটি নিজ মুখে আমার কাছে স্বীকার করেছে।’
পরে যখন জানা গেল অপরাধ সংগঠিত হয়নি, তার মানে ‘গুজব’ প্রক্টর নিজেও ছড়িয়েছিলেন। তিনি ভিসিকেও এই তথ্য সরবরাহ করেছেন। ভিসি হলের প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষকদের কাছে জানতে চেয়েছেন। তারাও ভিসিকে বলেছেন ‘অপরাধ সংগঠিত হয়েছে’। ভিসি সে কথা গণমাধ্যমের সামনে বলেছেন। তাহলে ‘গুজব’ ছড়ানোর দায় তো উপাচার্যেরও। শুধু গুজব নয়, প্রক্টর-ভিসি ছড়িয়ে পড়া ‘গুজব’কে সত্য ভিত্তি দিয়েছেন।
যেখানে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চলছে, সেই আইনের দোহাই দিয়ে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে নিপীড়নমূলক ব্যবস্থা নেওয়াকে উৎসাহিত করতে পারেন না। ‘অভিভাবকের দায়িত্ব’ বলে উপাচার্য যে নিপীড়নকে সমর্থন করছেন, ‘উপাচার্য পদটির জন্যে তা অত্যন্ত অসম্মানজনক। কোনো অভিভাবক খুশি মনে মাঝরাতে মেয়েদের হল থেকে নিয়ে যাননি। ‘অভিভাবকরা খুশি হয়েছেন, খুশিতে কেঁদে দিয়েছেন, বোনের ফেসবুক পোস্টের কারণে পুলিশ অফিসার ভাইয়ের চাকরি চলে যাবে’, সেই পুলিশ অফিসার একথা বলেছেন বলে উপাচার্য দাবি করছেন, এগুলো সৃজনশীল গল্প হিসেবেও উঁচু মানের নয়, সত্য কাহিনী তো নয়-ই।
সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদক গোলাম মর্তুজার ফেসবুক টাইমলাইন থেকে নেওয়া।
পাঠক মন্তব্য
জাতির শীর্ষস্তরের শিক্ষকদের নৈতিকতার অধঃপতন দুঃখজনক ও লজ্জাষ্কর- য়দিও তাঁরা লজ্জিত নন!!
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন