বেগম জিয়ার দুর্নীতি মামলা লড়তে নয়, বরং নিরাপদে তাঁকে লন্ডন আশ্রয় দিতেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে লর্ড কারলাইলকে। বিএনপি এবং জিয়া পরিবারের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। আজ মঙ্গলবারই লর্ড কারলাইল বেগম জিয়ার দুই আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী এবং খন্দকার মাহাবুব হোসেনের সঙ্গে কথা বলেছেন। জানা গেছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তিনি যুক্তরাজ্যে বেগম জিয়ার রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের আবেদন করবেন। এই আবেদনের পর বিএনপি চেয়ারপারসন বাংলাদেশ সরকারের কাছে প্যারোলের আবেদন করবেন। সূত্রমতে, বেগম জিয়া বাংলাদেশ থেকে মুক্তি এবং লন্ডনে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের পুরো কাজটা করতে লর্ড কারলাইল এক লাখ পাউন্ড (বাংলাদেশি টাকায় ১১৪ কোটি টাকা) নেবেন। ইতিমধ্যে তাঁকে অর্ধেক টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।
লর্ড কারলাইল ব্রিটিশ হাউস অব লর্ডসের একজন সদস্য। রাজপরিবারের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। বিভিন্ন দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিদের রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়ে ব্রিটিশ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য তিনি আলোচিত। লর্ড কারলাইল যুক্তরাজ্যে তারেক জিয়ার আইন উপদেষ্টা। লন্ডনে তারেক জিয়ার বিভিন্ন অপকর্ম ঢাকতে তিনি কাজ করেন। সর্বশেষ, লন্ডনে বাংলাদেশ দূতাবাস হামলায় তারেক জিয়ার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেলে এই লর্ড’ই তাঁকে আইনি সহায়তা দেন। এছাড়াও তারেক জিয়ার রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের ক্ষেত্রেও কারলাইল আইনি সহায়তা দিয়েছিলেন। বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য অপরাধী বিনিময় চুক্তি হলেও তারেককে যেন লন্ডনেই রাখা যায় সে কারণেই কারলাইল লবিং করেছেন। তারেক জিয়াকে আইনি সহায়তা দেয়ার জন্য প্রতিমাসে লর্ড কারলাইল ২০ হাজার পাউন্ড, কনসালটেন্সি ফি নেন। বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ প্রায় ২৩ লাখ টাকা।
জানা গেছে, শেষ পর্যন্ত তারেক জিয়া বেগম জিয়ার প্যারোলে মুক্তি এবং তাঁকে লন্ডনে নিয়ে আসতে সম্মত হয়েছেন। তবে, দলীয় আইনজীবীদের উপর তাঁর আস্থা নেই। এ কারণেই বেগম জিয়ার জন্য তাঁর আইনজীবীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
তবে, অন্য একটি সূত্র বলছে, লর্ড কারলাইলকে আইনজীবী পরামর্শক নিয়োগ স্রেফ একটা ভাওতাবাজি এবং ‘আই ওয়াশ’। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, ‘এখন তারেক এই আইনজীবী দেখিয়ে চাঁদাবাজি করবেন। নেতাদের এবং ব্যবসায়ীদের বলবেন, আইনজীবীর ফি দিতে হবে।’ ওই নেতা বলেন, ‘আমাদের আইনজীবীরা যথেষ্ট দক্ষ এবং পারদর্শী। বেগম জিয়ার জামিন এবং মামলা সব বিষয়গুলোই রাজনৈতিক। রাজনৈতিকভাবেই এটাকে সমাধান করতে হবে।‘ তাঁর মতে, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন গ্রেপ্তার হবার পর থেকেই তারেকের আয় উপার্জন কমে গেছে। আন্দোলন এবং মামলার খরচ মেটাতেই নেতারা হিমশিম খাচ্ছেন। এ কারণেই চাঁদাবাজি করতে নতুন ফন্দি আঁটা হয়েছে।’
অবশ্য এ ব্যাপারে তৃতীয় একটি মত আছে। তাঁরা মনে করছেন, বেগম জিয়া গ্রেপ্তার হবার এক মাসের বেশি সময় অতিবাহিত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যই লর্ড কারলাইলকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে তাঁরা মনে করেন।
বাংলা ইনসাইডার
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন