নেপালের কাঠমান্ডুতে ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় আহত ডা. রেজওয়ানুল হক শাওনের আইডি 'রিমেম্বারিং' করে দিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তিনি বেঁচে আছেন এবং সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পরিবর্তন ডটকমের চোখে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের এ ভুলটি ধরা পড়ে।
রেজওয়ান বর্তমানে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি আছেন। সেখানে তার স্ক্রিন ড্রাফটিং হয়েছে। তাকে ২৮ বা ২৯ মার্চ দেশে আনা হবে।
পরিবর্তন ডটকমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. লুৎফুল কাদের লেনিন।
এর আগে সোমবার বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের ডা. হাসান ইমাম বলেন, নেপালের ওই দুর্ঘটনায় আহত ডা. শাওন ও ইমরানা কবির হাসির অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাদের শরীরের চামড়া প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে তারা শঙ্কামুক্ত আছেন।
মৃতদের প্রকাশিত সরকারি তালিকায় যে ২৬ জনের নাম প্রকাশ করা হয়েছে, সেখানেও নাম নেই ডা. শাওনের। তাই তার ফেসবুক আইডি রিমেম্বারিং দেখানোয় অনেকে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।
ফেসবুক কারো আইডি রিমেম্বারিং করে তিনি মারা গেলে। সেক্ষেত্রে তার কাছের কোনো বন্ধু বা আত্মীয়-স্বজন ফেসবুকের কাছে তার মৃত্যু সম্পর্কিত তথ্য-প্রমাণাদি পেশ করতে হয়।
বিমান দুর্ঘটনায় আহত ১০ বাংলাদেশির মধ্যে নেপালের নরভিক হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ইয়াকুব আলী। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দিল্লি পাঠানো হয়েছে। এছাড়া হাসি ও রেজওয়ান সিঙ্গাপুরে আছেন। আর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন বাকি সাতজন।
উল্লেখ্য, ঢাকা থেকে ৭১ আরোহী নিয়ে গত ১২ মার্চ দুপুরে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে নামার সময় ইউএস-বাংলার ফ্লাইট বিএস-২১১ রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে এবং আগুন ধরে যায়।
এতে বিমানের ৫১ আরোহী নিহত হন। উড়োজাহাজে চার ক্রুসহ ৩৬ বাংলাদেশি ছিলেন। এদের ২৬ জনই নিহত হয়েছেন। আহত হন ১০ জন।
সোমবার শনাক্ত হওয়া ২৩ বাংলাদেশির মরদেহ ঢাকায় আনা হয়। আর্মি স্টেডিয়ামে জানাজা শেষে পরিবারের কাছে মরদেহগুলো হস্তান্তর করা হয়।
ডা. রেজওয়ানের ফেসবুক আইডি লিংক https://www.facebook.com/shaon001
এদিকে, উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় নিহত ডা. শাওনের স্ত্রী মানিকগঞ্জের মেয়ে তাহিয়া তানভীন শশীর মরদেহ আজ সকাল সাড়ে ৯টায় পৌর এলাকার লঞ্চঘাটের নিজ বাড়িতে আনা হয়। এ সময় নিহত শশীকে শেষ বারের মতো এক নজর দেখতে বাড়িতে শত শত নারী-পুরুষ ভিড় করে। মা-বাবাসহ স্বজনদের কান্নায় আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে উঠে।
পাঁচ বছর আগে ডা. রেজওয়ানুল হক শাওনের সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় শশীর। তবে তাদের কোনো সন্তানাদি আসেনি।
গত ১৭ মার্চ তাদের ষষ্ঠ বিবাহবার্ষিকী ছিল। আর এই দিনটিকে আলাদাভাবে পালন করার জন্য ঢাকা থেকে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সে নেপালের কাঠমান্ডুতে যাচ্ছিলেন এই দম্পত্তি। কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে নামার আগেই তাদের বহনকারী ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হলে প্রাণ হারান তাহিয়া শশী। আর এ ঘটনায় গুরুতর আহত হন তার স্বামী ডা. রেজওয়ানুল হক শাওন। তিনি বর্তমানে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন