জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের ওপর শুনানি আবার শুরু হয়েছে। এর আগে শুনানি চলাকালে বিচারপতিরা ১০ মিনিটের জন্য এজলাস ত্যাগ করেন। এ সময় আদালত আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে বলে যান, ‘আপনারা আদালতের পরিবেশ শান্ত করুন। আমরা ১০ মিনিট পর আসছি।’
সুপ্রিম কোর্টের এজলাস থেকে পরিবর্তন ডটকমের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মাহমুদুল হাসান জানান, রোববার বেলা দুইটা ১০ মিনিটে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের ওপর শুনানি শুরু হয়।
কিন্তু, সেখানে এত বেশি সংখ্যক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন যে, আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছিল।
এ সময় বিচারপতিরা বলেন, ‘এ অবস্থা চলতে থাকলে তো আমাদের উঠে যেতে হবে।’
তখন খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘এই মামলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গোটা জাতি এদিকে তাকিয়ে আছে। উৎসুক আইনজীবীরাও এজন্যই ভিড় করছেন।’
এরপর আদালত তাকে বলেন, ‘এমন হলে তো আদালতের পরিবেশ ঠিক থাকে না। কার্যক্রম চালানো যায় না।’
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আদালতকে বলেন, ‘আইনজীবীদের একটি তালিকা দিয়ে দিলে ভাল হয়। সেটি সর্বোচ্চ ৩০ জন হতে পারে। তাতে আদালতের পরিবেশ ঠিক থাকবে।’
তার কথার জবাবে জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘অ্যাটর্নি জেনারেল মেধাবী। এই মামলায় তিনি একাই যথেষ্ট।’
এরপর আদালত বলেন, ‘আপনার পরিবেশ শান্ত করুন। আমরা ১০ মিনিট পরে আসছি।’
এরপর দুই বিচারপতি বেলা দুইটা ১৬ মিনিটের দিকে এজলাস ছেড়ে উঠে যান। এরপর এজলাস থেকে জুনিয়র আইনজীবীদের বের করে দেয়া হচ্ছে।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজার বিরুদ্ধে করা খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে ওই মামলায় বিচারিক আদালতে খালেদা জিয়াকে দেয়া অর্থদণ্ডাদেশ স্থগিত করেন উচ্চ আদালত।
আদেশে এ মামলায় বিচারিক আদালতের নথিও তলব করা হয়েছে। উচ্চ আদালতের আদেশ পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে ওই নথি হাইকোর্টে পাঠাতে সংশ্লিষ্ট আদালতকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এই মামলার রায় দেন। এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং তারেক রহমানসহ অপর আসামিদের প্রত্যেককে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।
পাশাপাশি ছয় আসামির সবাইকে মোট ২ কোটি ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এই অর্থ সবাইকে সমানভাবে ভাগ করে পরিশোধ করতে বলা হয়।
রায়ের দিন আদালত ৬৩২ পৃষ্ঠার সারসংক্ষেপ পড়েন। রায়ের অনুলিপি ১ হাজার ১৭৪ পৃষ্ঠার। রায়ের পর থেকে রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন খালেদা জিয়া।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন