দেশে চাকুরীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ২৫৭ ধরণের কোটা পদ্ধতি চালু রয়েছে। সরকারি চাকুরীর সর্বোচ্চ নিয়োগ বিসিএসে কোটা রয়েছে ৫৬ শতাংশ। তাই চাকুরী প্রার্থীদের কাঙ্ক্ষিত বিসিএস থেকে শুরু করে প্রায় সব ধরনের সরকারি চাকুরীতে জায়গা হারাচ্ছেন মেধাবীরা। ফলে সঠিক মেধার মূল্যায়ন সম্ভব হচ্ছে না।
সংবিধানের ২৯ নং অনুচ্ছেদের ১ ধারা অনুযায়ী “প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদ লাভের ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা থাকবে।” তাই কোটা পদ্ধতিতে নিয়োগ অসাংবিধানিক এবং নৈতিকতা পরিপন্থী বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
কোটার ভারে ভারাক্রান্ত এখন সরকারি নিয়োগগুলো। ফলে একদিকে জনপ্রশাসনে কমছে যোগ্য লোকের সংখ্যা, অন্যদিকে শুধুমাত্র কোটার কারণে চাকুরী না পেয়ে হতাশা বাড়ছে মেধাবীদের। বিশেষজ্ঞরা বর্তমান প্রেক্ষাপটে কোটা-প্রথাকে অসাংবিধানিক বললেও সমস্যা সমাধানে পাল্টাপাল্টি মত কর্ম কমিশন ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের।
বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনে নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ, নারী এবং জেলা কোটা ২০ শতাংশ, উপজাতি ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী কোটা রয়েছে ১ শতাংশ।
যুদ্ধটা কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যের। হাতিয়ার এখানে শুধুই মেধা। তবে চাকুরীর বাজারে যোগ্যতার এই লড়াইয়ে হেরে যাচ্ছেন লাখ লাখ মেধাবী। আটকা পড়ছেন সনাতন কোটাপ্রথার ফাঁদে। স্কুল, কলেজ আর উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গণ্ডি পেরিয়ে একজন চাকুরী প্রত্যাশী যখন অবতীর্ণ হচ্ছেন স্বপ্নের সোপানে, সেখানেই তাকে মুখোমুখি হতে হচ্ছে বৈষম্যের।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ৫৫ শতাংশ কোটাতেই চলে গেলে মেধাবীরাতো চাইলেও চাকরিতে প্রবেশ করতে পারবে না। মুক্তিযুদ্ধ কোটা কিছুটা শিথিল করা উচিত।
কোটা পদ্ধতির ব্যাপারে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন দায় এড়ানো বক্তব্য দিলেও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বলছে পিএসসি স্বদিচ্ছাই পারে সমস্যার সমাধান করতে।
পিএসসি চেয়ারম্যান বলেন, পিএসসি নিজে কোন কোটা পদ্ধতি তৈরি করে না। রাষ্ট্র ও সরকার দ্বারা প্রণীত হয় পিএসসি সেভাবেই কাজ করে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির সদস্য আ র ম উবায়দুল মোক্তাদির বলেন, পিএসসি ভূমিকা রাখতে পারে কারণ আমাদের মেধা যাচাইয়ের মুল কাজ করেন তারা। তাদের মাধ্যমেই সরকারি চাকরিতে নিয়োগ লাভ করে।
শিক্ষাবিদরা বলেন, কোটা পদ্ধতি একদম থাকা উচিত না। এইটাতে সত্যি সত্যি মেধার পদ পিছিয়ে যায় এবং যারা এইভাবে আসেন তাদের জন্যে অসৎ পথ খুলে দেয়া হয়।
গত ৩১ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র ও ২ সাংবাদিকের পক্ষে সরকারি চাকুরীতে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে পুর্নমূল্যায়ন চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিটও দায়ের করা হয়েছে। সূত্র: সময় টিভি
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন