মাস দেড়েক আগে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমানকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক করার পর থেকে বোর্ডে এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
বোর্ড সচিব শাহেদুল খবিরকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করা নিয়ে বিব্রত হন কর্মকর্তারা। কারণ, চেয়ারম্যানের নিচের পদে তার চেয়ে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রয়েছেন।
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের অর্থনীতি বিষয়ের সহযোগী অধ্যাপক। চেয়ারম্যানের পদটি সিনিয়র অধ্যাপক পদ মর্যাদার। পদাধিকার বলে তিনি আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব কমিটির সভাপতিও।
অধ্যাপক না হলেও শাহেদুল খবিরকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়ায় পদটির ‘অমর্যাদা’ হচ্ছে বলে একাধিক বোর্ডের চেয়ারম্যান অভিযোগ করেছেন। প্রশ্নফাঁস, পরীক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয়ে তারা শাহেদুল খবিরের সঙ্গে বৈঠক করতেও বিব্রত হচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে মাথাব্যথা নেই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের।
চেয়ারম্যান ও সচিবের নিচের দুটি পদও অধ্যাপক পদমর্যাদার। অধ্যাপক পদ মর্যাদার কাউকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব না দেওয়ায় তারাও ক্ষুব্ধ। চলমান এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না বোর্ড। এ ধরণের ‘উদ্ভট’ পরিস্থিতির মধ্যেই চলছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড।
২০০৯ সালে প্রথমে শাহেদুল খবির বোর্ডের স্কুল পরিদর্শক হিসেবে প্রেষণে দায়িত্ব পান। পরে ভারপ্রাপ্ত সচিব। সেখান থেকে সচিব হন। অর্থাৎ টানা নয় বছর এই বোর্ডে প্রেষণে আছেন। চাকরি বিধি অনুযায়ী তিন বছরের বেশি সরকারি কর্মকর্তারা প্রেষণে থাকতে পারেন না।
বিসিএস সাধারণ শিক্ষক সমিতির অনুমোদন ছাড়াই খবির নতুন সরকারি কলেজ শিক্ষকদের পদমর্যাদা নিয়ে একটি মামলা করেছেন। যে কারণে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী সরকারি কলেজবিহীন উপজেলায় একটি কলেজ সরকারিকরণ আটকে গেছে।
জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শাহেদুল খবির বলেন, ‘বদলি-পদায়ন সরকারের ইচ্ছা। আমাকে দেওয়া দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় বোর্ডের চেয়ারম্যান নিয়োগ দিলেই আমি আগের পদে ফিরে যাব।’
ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান নিয়োগ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘যোগ্যলোক খোঁজা হচ্ছে। কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষকের কাছ থেকে আবেদন এসেছে। আমরা যোগ্যব্যক্তিকে নির্বাচিত করে আগামী এক মাসের মধ্যে ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা করছি।’
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সভাপতি আইকে সেলিমুল্লাহ খন্দকার বলেন, ‘অনেক অভিজ্ঞ ও দক্ষ শিক্ষক বছরের পর বছর প্রত্যন্ত এলাকার কলেজে চাকরি করছেন। আর কিছু ব্যক্তি শিক্ষকতা বাদ দিয়ে ঘুরে ফিরে লাভজনক পদে থাকছেন। এ নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভ রয়েছে।’
‘এক ধরনের বৈষম্য তৈরি হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনটি বাস্তবায়ন করলে এসব ঝামেলা থাকতো না।’
ঢাকাটাইমস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন