স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতাধীন সড়ক অবকাঠামোর অবস্থা সারা দেশেই বেহাল। এর মধ্যে ময়মনসিংহ অঞ্চলের অবস্থা একটু বেশিই নাজুক। এলজিইডির নজরও তাই এ অঞ্চলেই বেশি। ময়মনসিংহ অঞ্চলের ছয় জেলার অবকাঠামো উন্নয়নে ৩ হাজার ১৮৩ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছে এলজিইডি। ২০১৭ সালে সংস্থাটির অঞ্চলভিত্তিক অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে এটাই সবচেয়ে বড় অংকের।
এলজিইডির ময়মনসিংহ অঞ্চলের আওতাধীন জেলাগুলোর মধ্যে আছে ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোনা, টাঙ্গাইল ও কিশোরগঞ্জ। সূত্রমতে, ময়মনসিংহ জেলার ১৩টি উপজেলায় এলজিইডির সড়ক রয়েছে ১১ হাজার ৪২৬ কিলোমিটার। এর মধ্যে প্রায় দুই হাজার কিলোমিটার সড়ক পাকাকরণ প্রকল্পের আওতায় রয়েছে। আর ২৬০ কিলোমিটার সড়ক মেরামত অযোগ্য। সর্বশেষ বন্যায় টাঙ্গাইল জেলায় এলজিইডির আওতাধীন সড়কগুলোও বড় রকমের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর বাইরে জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জ জেলায় এলজিইডির সড়কগুলোও বেহাল। এসব সড়ক উন্নয়নে ময়মনসিংহ অঞ্চলের পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প শীর্ষক ৩ হাজার ১৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে এলজিইডি। গত মাসে প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির বৈঠকে অনুমোদনও পেয়েছে।
এলজিইডির পরিকল্পনা বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুর সাদিক এ প্রসঙ্গে বণিক বার্তাকে বলেন, শুধু সুপারিশ নয়, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও যাচাই-বাছাইয়ের পর প্রয়োজন বিবেচনায় প্রকল্প প্রণয়ন করা হয়। ময়মনসিংহ অঞ্চল হাওড় ও পাহাড় অধ্যুষিত। এছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগও এ অঞ্চলে বেশি হয়। মূলত ভৌগোলিক অবস্থা ও প্রাকৃতিক কারণে এ অঞ্চলের অবকাঠামোগুলো টেকসই হয় না। এসব বিবেচনায় সবচেয়ে বড় প্রকল্প নেয়া হয়েছে ময়মনসিংহ অঞ্চলের জন্য।
ময়মনসিংহের পর ২০১৭ সালে এলজিইডি সবচেয়ে বড় অংকের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প নিয়েছে রংপুর অঞ্চলের জন্য। গত বছর রংপুর বিভাগীয় গ্রামীণ অবকাঠামো প্রকল্পের আওতায় বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২ হাজার ৮৮৪ কোটি টাকা। এছাড়া রাজশাহী পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২ হাজার ৮০ কোটি টাকা। চতুর্থ সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে সিলেট বিভাগীয় গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে। এর পরিমাণ ১ হাজার ২১৪ কোটি টাকা। পাঁচ বছর মেয়াদি এসব প্রকল্পের বাস্তবায়ন সংশ্লিষ্ট এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন এলজিইডি কর্মকর্তারা।
অঞ্চল হিসেবে সবচেয়ে কম বরাদ্দ পেয়েছে কুমিল্লা। এ অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে ৯৮৬ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছে এলজিইডি। গত বছর সংস্থাটির হাতে নেয়া সবচেয়ে ছোট আকারের এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে কুমিল্লা, চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায়।সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিগত বছরগুলোয় কুমিল্লা অঞ্চলে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। গত বছরও একাধিক প্রকল্পের প্রস্তাব এসেছে এ অঞ্চলের জন্য। কিন্তু প্রয়োজন না থাকায় তা আমলে নেয়নি এলজিইডি।মনজুর সাদিক এ প্রসঙ্গে বলেন, কুমিল্লা অঞ্চলের জন্য বেশকিছু প্রকল্প নেয়া হয়েছে এর আগে। ফলে অঞ্চলটি এখন অনেকটাই পরিকল্পিত। তাই প্রয়োজন না থাকায় এ অঞ্চলের জন্য প্রকল্পের আকার ছোট।
bonikbarta
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন