হালিমুজ্জামান। সদা হাস্যোজ্জ্বল একজন সরল মনের মানুষ। দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে তিনি ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের সেবা দিয়ে আসছেন। প্রতি বছর ইজতেমা এলেই হালিমুজ্জামানের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। ইজতেমা শুরুর দুই মাস আগে থেকেই তিনি মুসল্লিদের সেবা দিতে নানা হিসাব কষতে থাকেন। অপর্যাপ্ত জনবল ও হরেক স্বল্পতার মাঝেও আশ্চর্যজনকভাবে তিনি মুসল্লিদের জন্য কিভাবে যেন সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করেন। সদ্য সমাপ্ত ৫৩তম বিশ্ব ইজতেমায় কাজ পাগল হালিমুজ্জামানের মুসল্লিদের সেবায় নানামুখি উদ্যোগ উঠে এসেছে পরিবর্তন ডটকমের অনুসন্ধানে। হালিমুজ্জামান টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার। বহু স্মৃতিবিজড়িত এই স্টেশনজুড়ে তার সুনাম।
বিশ্ব ইজতেমায় টঙ্গী স্টেশনটি গুরুত্বপূর্ণ, কর্ম ও প্রাণচঞ্চল হয়ে পড়ে। দেশের ৩২টি জেলা থেকে আগত মুসল্লিদের পদচারণায় ভিড়ে ঠাসা এই স্টেশন থেকে যাত্রীসেবা নিশ্চিত করাই বড় চ্যালেঞ্জ। কেননা ইজতেমায় লাখ লাখ মুসল্লির রেলযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে স্টেশনটিতে বাড়তি নিরাপত্তাসহ ট্রেনের এক্সট্রা সিডিউল নিয়ন্ত্রণে নিপুণ দক্ষতা প্রয়োজন।
হালিমুজ্জামান বলেন, প্রতি বছর বিশ্ব ইজতেমা শুরুর দুই মাস আগে রেলওয়ের পক্ষ থেকে মুসল্লিদের রেলযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে নানামুখি পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হয়।
স্টেশনটিতে নতুন কর্মপরিকল্পনা করতে হয়। সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে দিনরাত মনিটরিং করতে হয়। ইজতেমার সময় পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সহযোগিতায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় রেলওয়ে পুলিশ কন্ট্রোল রুম, পুলিশ ক্যাম্প, রেলওয়ের নিরাপত্তা কর্মীদের ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। ইজতেমা চলাকালীন সময়ে ক্যাম্পগুলো দিনরাত খোলা থাকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি মেডিকেল ক্যাম্পও স্থাপন করা হয়। স্টেশনটিতে সেনিটেশন ব্যবস্থা বৃদ্ধি করা হয়। ইজতেমায় আগত বিভিন্ন জেলার মুসল্লিদের জন্য ওজুখানা, নামাজ আদায় ঘরসহ অন্তত দুই শতাধিক মুসল্লি ধারণসম্পন্ন বিশ্রামাগার খোলা হয়। ইজতেমার সময় স্টেশনটি ভাসমান হকারমুক্ত রাখা হয়। পর্যাপ্ত টিকিট কাউন্টারসহ ভ্রাম্যমাণ টিকিট বিক্রি সেবাও চালু থাকে। এছাড়াও, এসময় সকল কর্মকর্তা-কর্মচারির ছুটি বাতিল করা হয়। এসব সার্বিক ব্যবস্থাপনা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নিয়মিত তদারকি করেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন