বন্দরনগরী চট্টগ্রামের উপকূলীয় জেলা মিরসরাইয়ের চরের মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে নতুন বছরের জানুয়ারি মাসের পর থেকে আর কোনো জমি বরাদ্দের আবেদন নেবে না বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। সব মিলিয়ে এখানে এখন পর্যন্ত এক হাজার কোটি বা ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে।
এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে এখন পর্যন্ত এসিআই ফার্মাসিউটিক্যালস ১০০ একর, অনন্ত গ্রুপ ২৫০ একর, বসুন্ধরা গ্রুপ ৫০০ একর, পিএইচপি স্টিল ওয়ার্কস ৫২৪ একর, কেএসআরএম স্টিল ২৫০ একর ও বিএসআরএমকে তিনটি কোম্পানির অধীনে ২৪০ একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আরও কিছু প্রতিষ্ঠান ১০ থেকে ২৫ একর জমি পেয়েছে।
বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, ‘জমি বরাদ্দের আবেদনপত্র চেয়ে আমরা অনেক সাড়া পেয়েছি। এখন সাময়িকভাবে নতুন আবেদন নেওয়া স্থগিত করার বিষয়টি চিন্তা করা হচ্ছে। কারণ আমরা এখন ভূমি উন্নয়ন; গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির মানসম্পন্ন সেবা নিশ্চিতের ওপর জোর দিতে চাই।’
মিরসরাই ও সিলেট বিভাগের শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলে গত এপ্রিল মাসে জমি বরাদ্দের আবেদন নেওয়ার বিবরণপত্র প্রকাশ করে বেজা। এর মধ্যে ৩৫২ একরের শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলে জমি বরাদ্দ শেষ। মিরসরাইয়ে জমি দেওয়া হচ্ছে দুভাবে—সরাসরি কারখানা করার জন্য এবং জমি নিয়ে তা উন্নত করে ইজারা দেওয়ার জন্য। মিরসরাইয়ে মোট ১২৯টি প্রতিষ্ঠান জমি বরাদ্দ নিতে আবেদনপত্র সংগ্রহ করেছে। এর মধ্যে সরাসরি কারখানা করতে ১৮টি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানকে ২ হাজার ৮২ একর জমি ইতিমধ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ৩ হাজার ২০০ একর জমি বরাদ্দের প্রক্রিয়ায় আছে বেজা।
সব মিলিয়ে ৫ হাজার ২৮২ একর জমি শেষ। এ ছাড়া আরও কিছু প্রতিষ্ঠানকে জমি বরাদ্দের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে। মিরসরাইয়ে বেশ কিছু বিদেশি বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে। তাও বেজার বিবেচনাধীন। ফলে প্রথম পর্যায়েই বিপুল পরিমাণ জমির চাহিদা তৈরি হচ্ছে।
উল্লেখ্য, মিরসরাইয়ে প্রায় ১২ হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করে বেজার অধীনে দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে আরও সাড়ে ৬ হাজার একর জমি অধিগ্রহণ ও বন্দোবস্তের পর্যায়ে আছে। বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, ২০১৯ সালের শেষ নাগাদ মিরসরাইয়ে তাঁরা ১০ হাজার একর জমি বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত করতে চান। অবশ্য সরকার ২০৩০ সালে দেশে যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বড় মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলটি। এর আয়তন হবে প্রায় ৩০ হাজার একর।
মিরসরাইয়ে ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য ১ হাজার একর জমি রাখা হয়েছে। বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেপজা) সেখানে একটি রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল করতে ১ হাজার ১৫০ একর জমি নিয়েছে। উন্নত করে ইজারা দেওয়ার জন্য ৫৫০ একর জমি পেয়েছে বসুন্ধরা-গ্যাসমিন-পাওয়ার প্যাক কনসোর্টিয়াম। এ ছাড়া দেশের রপ্তানিমুখী পোশাকশিল্পের জন্য ৫০০ একর জমি দেওয়ার কথা বলেছে বেজা।
মিরসরাইয়ে জমি উন্নয়নের পাশাপাশি গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণের কাজ চলছে।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন