বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, বরেণ্য শিক্ষাবিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর, ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভের বর্তমান ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এমাজউদ্দীন আহমদের ৮৫তম জন্মদিন আগামীকাল ১৫ ডিসেম্বর শুক্রবার।
এ উপলক্ষে স্বাধীনতা ফোরামের উদ্যোগে সকাল ১০ টায় তার ২৭৯/১ এলিফ্যান্ট রোডস্থ (কাঁটাবন মসজিদের বিপরীতের রাস্তায়) বাসভবনে এক সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমদসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এতে উপস্থিত থাকবেন।
১৯৩২ সালের এই দিনে অবিভক্ত বাংলার মালদহ জেলার কালিয়াচক থানার কালিনগরে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। পরে পরিবার চাপাইনবাবগঞ্জে স্থায়ীভাবে বসতি স্থাপন করেন। তার পিতা মরহুম সামসুদ্দীন আহমদ ছিলেন পেশায় একজন শিক্ষক এবং মাতা ছিলেন গৃহিনী।
তিনি ১৯৪৮ সালে ম্যাট্রিকুলেশন, ১৯৫০ সালে আইএ, ১৯৫২ সালে বিএ এবং ১৯৫৪ সালে এমএ (রাষ্ট্রবিজ্ঞান) পাস করেন। ১৯৬১ সালে তিনি ইংরেজিতে এমএ পাস করেন এবং ১৯৭৭ সালে কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৭০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনিয়র লেকচারার হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৯৮ সালের আগস্টে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর নেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পদে (রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান, হাজী মোহাম্মদ মুহসিন হলের প্রাধ্যক্ষ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর) পদে অধিষ্ঠত থেকে ১৯৯২ সালের ১ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর নিযুক্ত হন। ১৯৯৬ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তিনি এ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।
দেশে এবং বিদেশে, জাতীয় আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়ে প্রকাশিত তার গ্রন্থাদি বিপুলভাবে সমাদৃত হয়েছে। বাংলা এবং ইংরেজিতে লেখা তার গবেষণা গ্রন্থের সংখ্যা ইতিমধ্যে অর্ধশতক ছাড়িয়ে গেছে। বিশ্বের ১৫০টি জার্নালে তার গবেষণালব্ধ নিবন্ধাদি প্রকাশিত হয়েছে। ২১শে পদক ও স্বাধীনতা পদকসহ বিভিন্ন সম্মানে তিনি সম্মানিত হয়েছেন।
মহান ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে, ১৯৫২ এর পরবর্তী সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ছাত্রনেতা হিসেবে অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ কারাবরণও করেন। যুক্তরাষ্ট্রকেন্দ্রিক নব্বই দশকের সর্বাপেক্ষা ‘প্রশংসিত বাঙালি ব্যক্তিত্ব’ ছিলেন।
দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে তুলনামূলক রাজনীতি, প্রশাসন-ব্যবস্থা, বাংলাদেশের রাজনীতি, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি, দক্ষিণ এশিয়ার সামরিক বাহিনী সম্পর্কে গবেষণা করে চলেছেন। এসব ক্ষেত্রে সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় তিনি বিশেষজ্ঞ হিসেবেও প্রখ্যাত। তার লিখিত গ্রন্থের সংখ্যা অর্ধশতাধিক। দেশ বিদেশের খ্যাতনামা জার্নালে প্রকাশিত গবেষণামূলক প্রবন্ধের সংখ্যা শতাধিক। তার লিখিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: রাষ্ট্র বিজ্ঞানের কথা (১৯৬৬), মধ্যযুগের রাষ্ট্র চিন্তা (১৯৪৫), তুলানামূলক রাজনীতি: রাজনৈতিক বিশ্লেষণ (১৯৮২), বাংলাদেশে গণতন্ত্র সংকট (১৯৯২), সমাজ ও রাজনীতি (১৯৯৩), গণতন্ত্রের ভবিষৎ ( ১৯৯৪) শান্তি চুক্তি ও অন্যান্য প্রবন্ধ (১৯৯৮), আঞ্চলিক সহযোগিতা, জাতীয় নিরাপত্তা (১৯৯৯), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য প্রবন্ধ (২০০০)। এছাড়াও ইংরেজিতে অনেক মূল্যবান গ্রন্থ রচনা করেছেন তিনি।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন