রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচনের প্রার্থীরা নগরীর সব সমস্যার সমাধান করবেন। নিজেরা কোনো দুর্নীতির সঙ্গে জড়াবেন না। অন্যকে দুর্নীতি করতে দিবেন না।
সোমবার রংপুরে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এমন অঙ্গিকার ব্যক্ত করলেন মেয়র প্রার্থীরা।
তবে ওই অনুষ্ঠানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু উপস্থিত না থাকায় দর্শক স্রোতারা সমালোচনা করেছেন।
সোমবার দুপুরে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) উদ্যোগে ‘সিটি নির্বাচন ২০১৭ জনগণের মুখোমুখি’ শিরোনামে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত পাঁচ মেয়র প্রার্থী হলেন- জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, বিএনপির কাওছার জামান বাবলা, সিপিবি ও বাসদের আবদুল কুদ্দুস, ইসলামী আন্দোলনের এবিএম গোলাম মোস্তফা এবং এনপিপির সেলিম আখতার।
তবে আওয়ামী লীগের শরফুদ্দিন আহাম্মেদ ঝন্টু ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আসিফ শাহারিয়ার অনুপস্থিত ছিলেন।
উপস্থিত দর্শক শালবন মিস্ত্রিপাড়ার বাসিন্দা হালিমুজ্জামান হালিম এ নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, সাবেক মেয়র তার আমলে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছেন এমন অভিযোগ আছে। তাই তিনি জনতার মুখোমুখি হতে চান না। সে কারণে তিনি অনুষ্ঠানে আসেননি।
একই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন, মুন্সিপাড়ার বাসিন্দা সোহানুর রহমান, হাফিজুল ইসলাম, সংস্কৃতিক কর্মী আফজাল হোসেন।
উপস্থিত জনতাই শুধু ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তা নয়, অনুষ্ঠানের আয়োজক সংগঠন সুজনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার। তিনি জনগণের মুখোমুখি অনুষ্ঠানে দুই মেয়র প্রার্থীর না আসাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘অনুষ্ঠানে আসার জন্য তারা লিখিত অঙ্গীকার নামায় স্বাক্ষর করেছিলেন। কেন আসলেন না তার কোনো ব্যাখ্যাও পাওয়া যায়নি। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য বেশ কয়েকবার ফোন দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারা ফোন রিসিভ করেননি’।
মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে বিএনপি মেয়র প্রার্থী বাবলা নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হওয়ার ব্যাপারে তার আশঙ্কার কথা জানিয়ে বলেন, ‘নির্বাচনে জয়ী হলে দুর্নীতি করবো না এবং কাউকে দুর্নীতি করতে দেব না’।
জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী মোস্তফা নির্বাচন নিয়ে জনগণের মাঝে শঙ্কা রয়েছে জানিয়ে বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কিনা তা নিয়ে এখনও জনগণ আতঙ্কে রয়েছে।’
তারপরেও নির্বাচন কমিশন ও সরকারের প্রতি তার আস্থা আছে জানিয়ে তিনি বলেন,‘নির্বাচিত হলে নগরীর যোগাযোগ ব্যবস্থা ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন করবো। ঐতিহ্যবাহী শ্যামা সুন্দরী খাল পুনঃখনন করব। সেই সঙ্গে নগরীকে যানজট মুক্ত করব এবং দুর্নীতি মুক্ত করব সিটি কর্পোরেশন।’
অন্য প্রার্থীরাও রংপুর নগরীকে মডেল নগরীতে পরিণত করা ও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় না দেয়ার অঙ্গিকার ব্যক্ত করেন।
সুজনের প্রধান বদিউল আলমের সঞ্চালনায় ৩ ঘণ্টাব্যাপী এ অনুষ্ঠানে মেয়র প্রার্থীরা জনগণের বিভিন্ন প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দেন। পরে সব প্রার্থী হাতে হাত রেখে নির্বাচনের পরেও রংপুর নগরীর উন্নয়নে কাজ করার অঙ্গিকার করেন।
শেষে উপস্থিত নগরবাসীও সন্ত্রাস ও মাদক মুক্ত এবং অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য হাত তুলে শপথ নেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন