জীবিত সাক্ষীকে মৃত দেখিয়ে প্রতিবেদন দাখিলের ঘটনায় ময়মনসিংহের কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামরুল ইসলাম ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
সোমবার ঢাকার চার নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে ওই থানার ওসি ও এএসআই মো. মোয়াজ্জেম হোসেন স্বশরীরে হাজির হয়ে লিখিতভাবে কারণ দর্শান।
লিখিত কারণ দর্শানোর পত্রে ওসি অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য দুঃখ ও লজ্জা প্রকাশ করেন। আর এএসআই জীবিত সাক্ষীকে মৃত দেখিয়ে ট্রাইব্যুনালে দেয়া প্রতিবেদন দাখিল করেননি এবং ওই স্বাক্ষর তার নয়। তাই ওই বিষয়ে তার কোনো দায়বদ্ধতা নেই বলে জানিয়েছেন।
কারণ দর্শানোর প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে ওসিকে সতর্ক করে ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুর রহমান সরদার বলেন, ঘটনার সাঙ্গে একজন জড়িত আছে। ওই ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিকে খুঁজে বের করেন। না করলে মামলার রায়ে এ ব্যাপারে অবজারভেশন থাকবে।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১১ সালে জাতীয় অন্ধ সংস্থার মহাসচিব খলিলুর রহমান নিহত হন। এ ঘটনায় তার স্ত্রী হাসনা পারভীন মিরপুর থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলার চার্জশিটের (অভিযোগপত্র) ৮ নম্বর সাক্ষী ছিলেন ময়মনসিংহ জেলার ২৯/ক, কেসি রায় রোডের বাসিন্দা মো. নুরুজ্জামান শুভ। তিনি নিহত খলিলের ব্যক্তিগত সহকারী ছিলেন।
ট্রাইব্যুনাল ওই সাক্ষীকে সাক্ষ্য দিতে হাজির করতে ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানায় সমন পাঠান। এরপর ওই থানার এএসআই মোয়াজ্জেম হোসেন চলতি বছরের ১ জুলাই ঠিকানা সঠিক নয় মর্মে ট্রাইব্যুনালে প্রতিবেদন পাঠায়।
ট্রাইব্যুনাল পুনরায় সমন পাঠালে একই এএসআই প্রতিবেদন দিয়ে বলেন, সাক্ষী শুভ ২০১৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেছেন। একইসঙ্গে পৌরসভার মৃত্যুসনদসহ চলতি বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর তা ট্রাইব্যুনালে প্রতিবেদন আকারে পাঠান। যেখানে ওসি কামরুল ইসলাম প্রতিবেদনটি অগ্রগামী করেন।
উক্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে আসার পর মামলার বাদী সাক্ষী শুভর মৃত্যুর বিষয়টি নাকচ করলে ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুসনদ যাচাইয়ের জন্য ওসিকে নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে মৃত্যুর সনদটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়।
২৯ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে সাক্ষী শুভ সাক্ষ্য দেন। ওই দিন সে জানায়, তার বাড়িতে কোনো পুলিশ সদস্যই যায়নি। এরপর ওই দিন ট্রাইব্যুনাল ওই ওসি ও এএসআইকে স্বশরীকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে ওই বিষয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন